‘র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস ও জুলাইযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করো’—এই দাবিকে সামনে রেখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেন। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা ও সন্ত্রাস, একসাথে চলেনা’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ফ্যাসিবাদের দোসররা, হুঁশিয়ার সাবধান’সহ নানা স্লোগানে মুখর করে তোলেন ক্যাম্পাস।
কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ও ক্যাম্পাসে র্যাগিংমুক্ত ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা।
২. তথাকথিত জেলা ছাত্রকল্যাণ কমিটির নাম অপব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করা।
৩. জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধা শিক্ষার্থীদের হুমকি ও হেনস্তার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিরাপদ ও মর্যাদাসম্পন্ন পরিবেশ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মৌলিক অধিকার। কিছু গোষ্ঠী ছাত্রকল্যাণ কমিটির নাম ব্যবহার করে তা হরণ করছে।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আতাউল্লাহ আহাদ বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের গুপ্ত সন্ত্রাসীরা এখনো গোপনে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুখোশ পরে বিভিন্ন সংগঠনে ঢুকে র্যাগিং ও নিপীড়নের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনছে। প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান রাব্বি বলেন, “কোনো শিক্ষার্থী অপরাধ করলে তার বিচার করার অধিকার কেবল প্রশাসনের। কিন্তু এখন ছাত্রকল্যাণ কমিটির নামে কিছু নেতা নিজেরাই বিচার করছেন, যা সম্পূর্ণ অন্যায়।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান তানজিল হোসেন বলেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘ছাত্রলীগ ট্যাগিং’ দিয়ে হেনস্তা করা হচ্ছে। একটি জেলা ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের সভাপতি বা সেক্রেটারি কি কোনো শিক্ষার্থীকে ‘বাসে অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করতে পারেন? এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এবং দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংদী জেলা ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের এক বিবৃতিতে দুই শিক্ষার্থীকে ‘সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগে ওই সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন বাস ‘নোঙর’ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।