বাগেরহাট জেলা বিএনপি নেতা ও বাগেরহাট ৪ সংসদীয় আসনে বিএনপি'র নির্বাচনী মনিটরিং টিমের সদস্য আব্দুল হালিম খোকনের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে ও ইউনিয়ন বিএনপি'র নির্বাচন স্থগিত করা হয়। আব্দুল হালিম খোকন এর আগেও মোড়েলগঞ্জ পৌর বিএনপি'র সম্মেলনে তার বক্তব্যে বিএনপি'র কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলামকে বেকায়দায় ফেলেছিলেন। তাছাড়া মোংলা উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়া কালীন কর্মী সমর্থকদের গালি দিয়েছিলেন।
এবারের ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালী ইউনিয়নে। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে চরপুটি খালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পুটিখালী ইউনিয়ন বিএনপি'র দ্বিবার্ষিক সম্মেলন চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে। সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী খলিলুর রহমান শিকদার ও আব্দুস ছত্তার হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা ও হাতাহাতি একপর্যায়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুপুর ১১টায় পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী সম্মেলন শুরু হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল হালিম খোকন তার বক্তব্যে এই ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে পূর্বে একটি সমঝোতা হয়েছিল এবং এখন নির্বাচন অনাবশ্যক বলে ঘোষণা করেন। তার এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং সঙ্গে সঙ্গে দুই পক্ষের সমর্থকেরা প্রথমে বাক-বিতণ্ডা এবং পরে হাতাহাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আহতদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া পাঁচজন হলেন- শিহাব শিকদার, এমদাদুল হাওলাদার, সাইফুল হাওলাদার, অহিদুল ইসলাম ও মো. হালিম। আহতরা মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ডাকা হয়। সেনাবাহিনী উপস্থিত হলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ঘটনার সময়কার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা বিএনপির নেতা খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ মাইক হাতে বলেন, “আপনারা শান্ত থাকুন, আমরা সম্মেলন স্থগিত করছি। অনলাইনের মাধ্যমে নতুন তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।”
সংঘর্ষের বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর মধ্যে দোষারোপ চলেছে। আব্দুস ছত্তার হাওলাদার বলেন, খোকন সাহেব খলিলের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তিনি পক্ষপাতদুষ্ট বক্তব্য দিয়ে উত্তেজনা তৈরি করেন। এরপর খলিলুর রহমান শিকদারের লোকজন আমাদের উপর হামলা চালায়। অন্যদিকে খলিলুর রহমান শিকদার অভিযোগ করেন, আমাদের মূল ভোটারদের বাদ দিয়ে নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। কিন্তু আব্দুস ছত্তার হাওলাদারের লোকজনই আমাদের কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ জানান, সংঘর্ষের পর সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।