পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতে স্বস্তির সুবাতাস বইলেও এবারের ঈদুল আজহায় সেই দৃশ্যপট বদলে যায়। ঘরমুখো মানুষের ঢল এবং ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার ভিড়ে পুরনো রূপে ফিরে আসে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির অপেক্ষায় থেকে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রীরা।
বিশেষ করে ঈদের আগে ও পরে কয়েকদিন নদীতে পানি বৃদ্ধি, প্রবল স্রোত, ফেরির সংখ্যা কমে যাওয়া এবং দীর্ঘ নদীপথ—সব মিলিয়ে ভেঙে পড়ে ফেরিঘাট এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ। যানবাহনের চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে ঘাট এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, এবারের ঈদে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলে মোট ১৭টি ফেরি চলাচল করেছে। ৫ জুন পারাপার হয়েছে ৬ হাজার ৪৭টি যানবাহন, ৬ জুন ৪ হাজার ১৮২টি, ১২ জুন ৩ হাজার ৮১টি, ১৩ জুন ৪ হাজার ৫৩৯টি এবং ১৪ জুন পারাপার হয়েছে ৫ হাজার ১১৪টি যানবাহন।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দায়িত্বরত ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, “নদীতে স্রোত বেড়ে যাওয়ায় দুটি ছোট ফেরি চলাচল করতে পারেনি। ফলে ফেরির সংখ্যা কমে যায় এবং যানবাহন জমে যানজট তৈরি হয়। আগে যেখানে ৩০ মিনিটে পারাপার হতো, এখন সময় লাগছে ১ ঘণ্টা।”
বিআইডব্লিউটিসি-এর ভারপ্রাপ্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালাম বলেন, “যদিও নদীতে পানি বেড়েছিল, স্রোত ছিল, তারপরও আমাদের অভিজ্ঞ মাস্টারদের দক্ষতায় নিরাপদে পারাপার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। মানুষ নিরাপদে বাড়ি গিয়েছে ও ফিরেও এসেছে।”
যাত্রীরা বলছেন, এবার ঈদের ভ্রমণ যেন রীতিমতো যুদ্ধের শামিল। দীর্ঘ সময় ফেরিঘাটে অপেক্ষা, খাবার ও টয়লেট সংকট, যানজটের দুর্ভোগ—সব মিলিয়ে ঈদযাত্রার আনন্দ অনেকটাই মলিন হয়ে গেছে।