কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চক্রান্তে নিজেই ফেঁসে গেলেন দুই যুবক। পূর্ববিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে ইয়াবা গাঁথা করে বন্ধু মিলন ও এরশাদুলকে ফাঁসাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছেন জুয়েল হক ও মনির হোসেন নামে দুই বন্ধু।
থানা সূত্রে জানা যায়, নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারো মাথা বাজার এলাকার তালুকদার এন্টারপ্রাইজের সামনে একটি মোটরসাইকেলে ইয়াবা লুকিয়ে রাখা হয়েছে—এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই (নিঃ) অলকান্ত রায় সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালান। সেখানে উপস্থিত জনতার সামনে একটি সুজুকি জিকজার মোটরসাইকেলের সিটের নিচ থেকে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় ৬৭ পিস গোলাপী রঙের ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ সময় মোটরসাইকেলের মালিক মিলন মিয়া ও তার সঙ্গী এরশাদুল হককে প্রাথমিকভাবে আটক করা হয়।তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা যায়, চার মাস আগে ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে বন্ধুত্ব বিচ্ছিন্ন হওয়া মিলন মিয়াকে ফাঁসাতে ইয়াবা সংগ্রহ করে তার মোটরসাইকেলে গোপনে লুকিয়ে রাখেন জুয়েল ও মনির।
এরপর মনির নিজেই পুলিশের সোর্স সেজে খবর দিয়ে মিলনকে হাতেনাতে ধরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এবং তদন্তে ঘটনার পুরো চিত্র স্পষ্ট হয়। এ ঘটনায় ১৫ জুন ভোরে ফুলবাড়ী থানা পুলিশের সহায়তায় মূল অভিযুক্ত জুয়েল হককে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে পুরো ষড়যন্ত্রের জাল উন্মোচিত হয়।
পুলিশ নিশ্চিত হয়, মিলন ও এরশাদুল এই ঘটনার সঙ্গে সম্পূর্ণ নির্দোষ। পরবর্তীতে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হয়।এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার ওসি সাংবাদিকদের জানান, “ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। তদন্তে আমরা প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করেছি। মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিরপরাধ কাউকে ফাঁসাতে কেউ পার পাবে না।”
ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা এই ষড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।