মেয়েদের স্টাইলে কথা বলাটাই কাল হলো ১৮ বছর বয়সী ইয়াছিন আরাফাতের। জোর করে তাকে মাদারীপুর থেকে মাইক্রোবাসে তুলে খুলনা নিয়ে গিয়ে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় হিজড়া ও তাদের ভ্যানচালকদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ঘটনার চারদিন পর রোববার (৩ এপ্রিল) ওই কিশোরকে প্রাইভেটকারে নিয়ে এসে শহরের পানিছত্র এলাকায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। সোমবার (৪ এপ্রিল) বিষয়টি জানাজানির পর পুরো জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইয়াছিন সদর উপজেলার চরগোবিন্দপুর এলাকার রেজাউল মোড়লের ছেলে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
ঘটনার পর পলাতক রয়েছে অভিযুক্তরা। প্রধান অভিযুক্ত হলেন- নুরু নপ্তি। সে উপজেলার বাবনাতলা মোড় এলাকার খলিল নপ্তির ছেলে।
ভুক্তভোগীর পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ মার্চ মাদারীপুর সদর উপজেলার মঠের বাজার থেকে ইয়াছিন আরাফাতকে জোর করে মাইক্রোবাসে তোলে স্থানীয় হিজড়াদের ভ্যানচালক নুরু নপ্তি। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। সেখানে ওই কিশোরকে অচেতন করে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
আরও জানা গেছে, ইয়াছিনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় রোববার সকালে পানিছত্র এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় হিজড়া ও তাদের ভ্যানচালক নুরু তাদের দলে নিতেই ওই কিশোরের লিঙ্গ পরিবর্তন করার উদ্দেশে এ কাজ করেছেন। ইয়াছিনের মেয়েদের স্টাইলে কথা বলার অভ্যাস থাকার কারণেই হিজড়াদের দলে ভেড়াতে ইয়াছিনের সাথে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। দোষীর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন স্বজনেরা।
ভুক্তভোগী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, আমাকে চিকিৎসার নাম করে নুরু নপ্তি ও জুঁই হিজড়া এই সর্বনাশ করেছে। আমাকে হিজড়া বানাতে ওদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার গোপনাঙ্গ কেটে ফেলেছে। আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে। আমার মতো আর কোনও ভাইয়ের যেন এমন ক্ষতি না হয়। প্রশাসনের কাছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
ইয়াছিনের দাদী ফুলজান বিবি বলেন, আমার নাতীর জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। এই ঘটনার বিচার চাই।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ইয়াছিনকে পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার প্রসাবের জন্য আলাদা একটি পাইপ বসানো হয়েছে। ইয়াছিনের অবস্থা গুরুতর।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।