দুর্ভোগের রাস্তা কিশোরগঞ্জ ময়মনসিংহ মহাসড়কে দায়সারা রিপেয়ারিং এর কাজ চলছে৷ সড়ক ও জননপথের সংশ্লিষ্টদের নেই কাজের তদারকি৷ ফলে ড্রাইভার- হেলপার মিলে করছে সড়কের সংস্কার কাজ। পায়ের চাপে মহাসড়কের গর্ত মেরামত করতে দেখা গেছে সওজ ট্রাকচালকের।
এমন দায়সারা কাজ একদিকে করা হচ্ছে অপরদিকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ রাষ্ট্রের গচ্চা যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা৷ রাষ্ট্রকে ফাঁকি দিয়ে এভাবেই চলছে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের দায়সারা কাজ। ফলে কোন সুফল আসছেনা বরং কষ্ট তীব্র হচ্ছে।
এসব দেখার যেনো কেউ নেই৷ মনগড়া কাজ বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে আনন্দের সাথে সড়ক ও জননপথ৷ সরকারের সংশ্লিষ্টদের তদারকি ও নজরদারির অভাবে এমন কাজ সুফলের পরিবর্তে আরো চরম দুর্ভোগ বাড়বে এমনটা মনে করছেন চলাচলকারী মানুষ ও গাড়ির চালকরা ৷
ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ফাটল ও গর্ত। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এখন পানি জমে আছে তাতে। কখনো হাত, কখনো পায়ে চাপ দিয়ে সেই ফাটল ও গর্তে পাথর বসিয়ে পানি জমে থাকা অবস্থায় মেরামতের চেষ্টা করছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের(সওজ) এর এক ট্রাকচালক। রবিবার (২২ জুন) বিকেলে এমন দৃশ্য দেখা যায় কিশোরগঞ্জ- ময়মনসিংহ মহাসড়কের কাটাবাড়িয়া নামক স্থানে।
ওই স্থানে দেখা যায় সড়ক ও জনপথের একটি ট্রাক দাঁড়ানো রয়েছে। আর সেখান থেকে ভেজা বালু ও তরল বিটুমিন নিয়ে আসছেন তিনজন শ্রমিক। আর সড়কের গর্ত ও ফাটলে পাথর বসিয়ে তা প্রথমে হাতে ও পরে পায়ে চাপ দিচ্ছেন একজন। কাছে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে ওই ট্রাকের চালক আল-আমীন বলে পরিচয় দেন।
এভাবে এ ধরনের কাজ করছেন কেন,কোনো দায়িত্বশীল লোক কি নেই- এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাকের চালক আল-আমীন বলেন, ‘আমিই তো সব পারি। লোকের দরকার কি?’ আপনার পরিচয় কি জানতে চাইলে তিনি সওজের ট্রাকচালক বলে পরিচয় দেন। এখানো তো একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী(এসও) থাকার কথা- এমন কথার জবাবে আল-আমীন বলেন, উনি চলে গেছেন। আমরাই পারি।
এ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। এটা তো আপনি করতে পারেন না- এমন প্রশ্নে ওই ট্রাক চালক উত্তেজিত হয়ে বলেন,‘অহন তো আমরার সময় । এই ছোড কাজে বড় কর্তার প্রয়োজন নাই। আপনি ছবি তুইল্যা কি করবেন?
এসব প্রতিবাদের পরও আল-আমীন তার তিনজন লোককে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। ওই সময় দেখা যায় সড়কে বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল ও গর্ত রয়েছে।
বর্ষায় ওই জায়গায় আরও বড় হচ্ছে। আর এই সব জায়গায় পানি জমে থাকার পরও পানি ও ময়লা না সরিয়ে পাথর ও ভিজা বালু মিশিয়ে পা দিয়ে ঘষা দিচ্ছে। এরপর ওপরে দেয়া হচ্ছে তরল বিটুমিন। বিটুমিন গরম কিনা কাছে গিয়ে একটু স্পর্শ করলে দেখা যায় প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মো. ফয়সাল জানান,‘এটা সাময়িক রিপেয়ারিং। এই জন্য এটা এভাবে তারাই করে থাকেন। এখানে বড় কাউকে দেওয়া হয় না।’ তাছাড়া লোকবলের সংকটের কথাও বলেন তিনি। যেভাবে মেরামত করা হচ্ছে তা তো যানবাহন যাওয়ার পরেই উঠে যাবে- এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,‘একটা দরমুজ ব্যবহার করতে বলছিলাম। বিষয়টি আমি দেখছি।’