নাটোর রথযাত্রা হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ উৎসব, যা আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয়। এই উৎসবে ভগবান জগন্নাথ অর্থাৎ কৃষ্ণ, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীকে রথে করে মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। রথযাত্রা ভগবান জগন্নাথের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তনের স্মরণে পালিত হয়।

নাটোরে এ উপলক্ষে আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা উপলক্ষে শহর জুড়ে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। নাটোরে প্রধান ছয়টি রথ ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি ছোট ছোট রথ ব্যক্তি উদ্যোগে বের করা হয়। জেলা শহরের রাণী ভবানী রাজবাড়িস্থ শ্যাম সুন্দর মন্দির, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনা সংঘ বা ইসকন মন্দির বঙ্গজল, কানাইখালী মন্দির, মল্লিকহাটি, বড়গাছা পালপাড়া এবং শ্রী শ্রী ভট্টাচার্য গৌড়ীয় মন্দির থেকে রথযাত্রা একই সময়ে শুরু হবে। নাটোরে নাটোর শহরে বড় ছয়টি রথ প্রস্তুত হয়েছে জগন্নাথ দেব বলভদ্র কে নিয়ে এই রথ যাত্রা শুরু হবে। থেকে রথ নিয়ে শোভাযাত্রা শুরু হবে বিকেল তিনটার দিকে। এই রথযাত্রা শহর ঘুরে জয় কালীর বাড়ি মন্দিরে এসে শেষ হবে।

এই রথযাত্রার নির্বিঘ্ন করতে গত ২০ জুন শহরের শ্রী শ্রী মন মহাপ্রভু মন্দির আঙ্গিনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে পূজা উদযাপন পরিষদের এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন অন্যান্য বৎসরের মত রথযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সকল প্রকার আশ্বাস প্রদান করেন। এই প্রস্তুতি সভায় জেলার সকল মন্দির কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা তাদের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলেই রথযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বিভিন্ন মন্দির কমিটির উদ্যোগে  তাদের রথ গুলোকে বর্ণিল সজ্জা করা হয়েছে। রথের রশি ধরে হাজার হাজার ভক্ত রথ টানবেন এবং লালবাজার এলাকায় জয়কালী বাড়ির মন্দিরপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রথযাত্রা সম্পন্ন হবে অন্যান্য রথগুলো তাদের নিজে নিজেও গন্তব্যে গিয়ে শেষ হবে।

সাত দিনের আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান শেষে পুনরায় “উল্টো রথ” অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে আবার দেবতাদের রথ টেনে রাণী ভবানী রাজবাড়ি এবং অন্যান্য রথ গুলো তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে আনা হবে।

শ্যাম সুন্দর মন্দির কমিটি ও অন্যান্য মন্দির কমিটি এ আয়োজনের সকল দিক সমন্বয়ে কাজ করছে। রথ টানা, মঞ্চ প্রস্তুতি ও দর্শকদের সহায়তায় তারা প্রধান ভূমিকা পালন করছে।

বাস্তবে উৎসবকালীন এই আয়োজন শহরের প্রাণের উৎসবমুখর মুহূর্তগুলো তুলে ধরবে। নারী-পুরুষ, পরিবারের সক্রিয় অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। শ্যাম সুন্দর মন্দির থেকে শুরু করে সিদ্ধান্তগ্রহণ, রথ টানা ও আনন্দ মিছিল, কীর্তন গান সবই ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সামাজিক বন্ধনের এক অপ্রতিরোধ্য দৃশ্যের অবতারণা ঘটবে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা পুলিশ সুপার এবং পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ শ্যামসুন্দর মন্দিরের রথ টেনে এই রথযাত্রার সূচনা করবেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।