বঙ্গোপসাগরে মাছের বংশবিস্তার ও সংরক্ষণ নিশ্চিতে জারি করা ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকার করতে সমুদ্রে গিয়ে খালি হাতে ফিরছেন উপকূলীয় অঞ্চল ভোলার চরফ্যাশনের জেলেরা। জ্যৈষ্ঠ থেকে ভরা মৌসুম চলছে ইলিশের। কিন্তু জ্যৈষ্ঠ- পেরিয়ে আষাড়েও আশানুরূপ দেখা মিলছে না রুপালী ইলিশের। জেলেরা দিনরাত জাল ফেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরতে পারছেন না।
যে সামান্য মাছ পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়ে নৌকার জ্বালানি তেলের খরচও উঠছে না। ফলে ভোলার জেলে পরিবার গুলোতে নেমে এসেছে চরম হতাশা। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মাছ ঘাট, খেজুর গাছিয়া, মাইনুদ্দিন ঘাট থেকে নিষেধাজ্ঞা শেষে হাজারও জেলেরা মাছ শিকারের আশায় প্রতিদিন জাল ও নৌকা-ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে যান ।
কিন্তু দিনের পর দিন জাল টেনেও আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না। মাছ বিক্রি করে আয় না হওয়ায় পুঁজি হারাচ্ছেন তারা। এতে অভাব, অনটন আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে জেলেদের। জেলেরা জানান, কাঙ্ক্ষিত ইলিশের আশায় অনেকে ধারদেনা করেছেন, আবার কেউ এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জাল তৈরি ও নৌকা মেরামত করেছেন।
কিন্তু আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় সেই ঋণ পরিশোধের দুশ্চিন্তায় এখন দিশেহারা জেলে ও আড়ৎদাররা।
এদিকে, ইলিশের এই সংকটে শুধু জেলেরাই নন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আড়তদাররাও। বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকলেও এবার তা অনেক কমে গেছে। সামরাজ মাছ ঘাটের আড়তদাররা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় বর্তমানে ইলিশের আমদানি কম হওয়ায় দামও অনেক বেশি। চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেছেন বর্তমানে ইলিশের প্রাপ্যতা কিছুটা কমেছে।
এর কারণ হিসেবে তিনি কম বৃষ্টি ও তলদেশে খাদ্য কমে যাওয়া এবং পানিদূষণকে দায়ী করেন। তবে কিছু দিনের মধ্যে জেলেরা কাঙ্খিত ইলিশ পাবে বলে তিনি আশাবাদি।