বাংলাদেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান বলেছেন, ত্রয়োদশ সংষোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে দিনের ভোট রাতে কাজ করার কালচার চালু হয়েছে, ত্রয়োদশ সংষোধনী রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। ত্রয়োদশ সংষোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে অবিচারের বিজ রোপন করা হয়েছে।
ত্রয়োদশ সংষোধনীর রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে খুনের রাজনীতি চালু হয়েছে। ত্রয়োদশ সংষোধনীর রায় এসেছিল বলে আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো মানুষের এই অধিকারটাকে চিরতরে নির্বাসনে পাঠানোর একটা অপচেষ্টা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, যে বাংলাদেশকে বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন, যে বাংলাদেশে বেগম খালেদা জিয়া নারীর অধিকার, শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। এর পর ধিরে ধিরে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে হেটে ছিল। যে বাংলাদেশের সংবিধানের ত্রয়োদশ সংষোধনী এনে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে স্থায়ী রূপ দেয়ার জন্য সপ্ন বুনেছিলেন। সেই সপ্ন বাংলাদেশের জুডিশিয়ারি করাপশনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাÐের মহা ভিলেন ছিলেন বাংলাদেশের জুডিশিয়ারি কুলাঙ্গার চিফ জাস্টিজ এবিএম খায়রুল হক।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি মো: আসাদুজ্জামান।
তিনি আরো বলেন, আজকে আমরা বিপ্লবের সফলতা ভোগ করে ক্ষমতার মসনদে বসে আছি তাদের দিকে হয়তো তাকিয়ে, সন্তান হারা মা, পা হারা পঙ্গু ব্যক্তি, চোখ হারানো মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে বলবে তোমার ভুবনে ফুলের নালা, আমি কাঁদি সাতরাই,এই যে বেদনা, এই যে আর্তি। এই আর্তির কারণ আমরা এখন পর্যন্ত বিপ্লবের যে চেতনা, বিপ্লবের যে আকাঙ্খা, বিপ্লবের যে পরিণতি সেই যৌক্তিক পরিণতির কাছে বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে যেতে পারিনি।
সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট কামাল আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সদস্য (বিশেষ পিপি) এডভোকেট বকসী জুবায়ের আহমদ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ মো: খাদেম উল কায়েস, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল এর বিচারক এনায়েত কবির সরকার, জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেন, পুলিশ সুপার এম,কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এডভোকেট এটিএম ফয়েজ উদ্দিন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট শান্তি পদ ঘোষ সহ সিনিয়র আইনজীবীরা।
বক্তব্য‘র শুরুতে ৩৬ শে জুলাই আন্দোলনকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রাত পোহালে ৩৬ শে জুলাই। এক বছর আগে আমাদের মাঝ থেকে ২ হাজার তরতাজা প্রাণ তাদের জীবন দিয়ে জুলাই মাসটা আমাদেরকে উপহার দিয়েছিল। রাত পোহালেই মনে হবে জুলাই এর ৩৬ দিন যাকে আমরা ভালবেসে ৩৬ শে জুলাই নাম দিয়েছি। সেই ৩৬ দিনে আমাদের মাঝ থেকে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
এর আগে দুপুর ২ টার দিকে শহরের আদালত সড়কের পাশে জেলা আইনজীবী সমিতির ২নং বার হলের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান। ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন শেষে অংশ নেন বিশেষ মোনাজাতে। এর পর জেলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।