পাহাড়ের চারিদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সবুজের সমারোহ লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় ড্রাগন ফলের চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, প্রাই পাঁচফুট উচ্চতার প্রতিটি কংক্রিট খুঁটি পেঁচিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন ফলের গাছ, প্রতি গাছে ঝুলছে ২ থেকে ৩ করে কাঁচা, পাকা ও আধা পাকা ড্রাগন ফল। কোনোটির ওপরের রং গোলাপি আবার কোনটির হলুদ।
এসব প্রজাতির ড্রাগন সব রকমের মাটিতে সহজেই চাষ করা সম্ভব। বিদেশি প্রজাতির এই ড্রাগন ফলের চাষ করে নতুন সম্ভাবনার পথ দেখাচ্ছেন ,মং সাই উ মারমা নামের এক প্রগতিশীল কৃষক ,তিনি বান্দরবান একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পাশাপাশি গ্রামে কৃষি খামার করার উদ্যোগ নিয়ে শুরু করেন ড্রাগন চাষ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,,রাজস্থলী উপজেলার ঘিলাইছড়ি ইউনিয়নের ঝঝড়ি পাড়ার বাসিন্দা মং সাই উ মারমা নিজ উদ্যোগে .৬০ একর জমিতে ড্রাগনের বাউ ড্রাগন-২ (লাল ও সাদা) এবং ভিয়েতনাম ইয়েলো জাতের চাষ করেছেন। পাহাড়ি জমিতে চাষাবাদের উপযোগিতা ও মাটি পরীক্ষার পর তিনি এই চাষ শুরু করেন, এবং অল্প সময়েই আশানুরূপ ফলন পেয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন।।
বাগানের মালিক মংসাইউ মারমা বলেন, আমরা বাগানে ২-৩জন মাসিক বেতনে কাজ করে। বাগানে তিনটি জাতের ড্রাগন ফল আছে। এগুলো দেখাশোনা ও পরিচর্যা করে ,বাগান পরিচালনা করেন কালামং মারমা ভগ্নিপতি তাদের পরিবারের সকল সদস্য কাজ করে থাকে,,, ২০২১ সালে ড্রাগন বাগানটি শুরু করা হয়। তার আগে এইখানে আম বাগান ছিল তারপর ইউটিউব ভিডিও দেখে দেখে ড্রাগন গাছ লাগানো হয়,ধাপে ধাপের বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। ড্রাগনের চাষ করে আমরা সফল। যেহেতু ড্রাগন বিদেশি ফল, অনেকেই শঙ্কা করছিল এই গাছে ফল হবে কী না। তারপরও আমরা ড্রাগন ফলের চাষ করি। এখন ফলন ভালোই হয়েছে। বাউ ড্রাগন-২, লাল ও সাদা আর ভিয়েতনাম ইয়েলো,পরিমাণ জায়গা,.৬০ একর জায়গা জুড়ে তিনটি প্রজাতির ড্রাগন চাষ হয় এ বাগানে।
তিনি আরও বলেন, বাগান শুরুর এক বছর পর প্রায় আড়াই লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি। যার বেশির ভাগ টাকা আসে ড্রাগন ফল থেকে। এবার ড্রাগনের ফলনও ভালো হয়েছে। বছরের এই সাত-আট মাসে ১০ লাখ টাকার ফল বিক্রি হয়েছে। বাকি সময়ে আরও ১০ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করি। এতে বেকার যুবকেরা সময় দিতে পারছেন। তাদের একটা কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এটি দেখে বেকার তরুণরাও কৃষি খামার করতে পারে। এতে তরুণরা সফলতা পাবেন বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা।
রাজস্থলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়াজ বিশ্বাস বলেন, অত্যন্ত যত্ন ও পরিকল্পনার মাধ্যমে ড্রাগনের চারা রোপণ থেকে শুরু করে নিয়মিত পরিচর্যার ফলে এখন প্রতিদিনই বাগান থেকে ফল তোলা হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও জেলা শহর রাঙামাটিতেও রয়েছে তার ড্রাগনের চাহিদা।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই পাহাড়ি অঞ্চলে ড্রাগন চাষ হতে পারে একটি রপ্তানিযোগ্য খাত। আর মং সাই উ মারমার মতো কৃষকরাই হতে পারেন এই বিপ্লবের অগ্রদূত।