× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

চাঁদাবাজির অভিযোগে খুলনার দুই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে তীব্র বিতর্ক,ফোনালাপ ফাঁস

মো: নুরুল আমিন নুর,খুলনা প্রতিনিধি।

০৭ জুলাই ২০২৫, ১৯:০৮ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

খুলনায় একটি মেলার আয়োজকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা মহানগর’-এর সদস্য সচিব জহুরুল ইসলাম তানভীর এবং মুখ্য সংগঠক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ। গতকাল (৬ জুলাই) রাতে চাঁদা দাবির একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

ফাঁস হওয়া ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ফোনালাপে মেলার আয়োজক মন্টুর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা যায় সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদকে। কথোপকথনে আজাদকে বলতে শোনা যায়, "আমি পারব সবাইকে ঠাণ্ডা করতে A to Z, কেউ ওইদিকে ঘুরেও তাকাবে না—যদি ১০ টাকা দেন (১০ লাখ)। আর যদি না দেন, তাহলে আজ এক গ্রুপ যাবে, কাল আরেক গ্রুপ যাবে—আপনি কয়জনকে ঠাণ্ডা করবেন?"

জবাবে মন্টু বলেন, "আমার দ্বারা তো সবাইকে ঠাণ্ডা করা সম্ভব না।" এর উত্তরে আজাদ হুমকি দেন, "আপনার পুলিশ কমিশনারও ঠাণ্ডা করতে পারবে না, বলে দিয়েন তারে।" মন্টু তখন জানান, "আমার হাতে দুই টাকা (লাখ) রেডি আছে, বললে এখনই দিয়ে যাব। প্রতি গ্রুপে তো দিতে পারব না ভাই।" পরবর্তীতে মন্টু সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন যে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডটি তার এবং সাজ্জাদের ফোনালাপ, যা "১০০% সত্য"।

অডিওটি ফাঁস হওয়ার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইশরিয়াক কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়কে অরাজনৈতিক ঘোষণার পরও কিছু তথাকথিত সমন্বয়ক নিজেদের পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।" তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে এবং তারা দামি বাইকে চলাফেরা করছেন।

আজাদ নিজেকে ‘জুলাই আন্দোলনের কান্ডারি’ দাবি করলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। ইশরিয়াক কবির প্রশাসনকেও তাদের রক্ষার চেষ্টার জন্য প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, অভিযোগ করে যে ‘জুলাই চেতনা’ ব্যবহার করে তারা মূলত নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে।

এই অভিযোগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার জানান, তিনি অডিওটি দেখেছেন এবং এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইনামুল হাসান বলেন, "নবপর্যায়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি আর্থিক স্বচ্ছতা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
অভিযোগের বিষয়ে সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ ও জহুরুল ইসলাম তানভীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে জানান, তিনি বর্তমানে ফরেস্টিতে আছেন এবং সারাদিন নেটওয়ার্কের বাইরে ছিলেন। তিনি বিষয়টি এখনো দেখেননি এবং ৮ বা ৯ তারিখে যোগাযোগ করলে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।

এই ঘটনায় শিক্ষার্থী মহল দ্রুত তদন্ত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠনগুলোর দায়বদ্ধতা ও করণীয় নিয়ে আলোচনা চলছে। এই ঘটনা খুলনা ও বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।



Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.