× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মালিক সমিতি-শ্রমিক ইউনিয়ন-বিআরটিএ’ ঘুরে,অমীমাংসিত উত্তর;দক্ষ চালকের দায়ভার কার?

রাজশাহী ব্যুরো।

০৮ জুলাই ২০২৫, ১৪:২৫ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

রাজশাহীতে দূরপাল্লার যাত্রীবাহি বাসের সংখ্যা ক্রমান্বয়েই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকমাস পর পর চোঁখে পড়ে নতুন নতুন নামিদামি চেয়ারকোচ। সাধারণ ও ‘ব্রান্ডের এসি/নন-এসি’ ছাড়াও ডাবল ডেকারের এসি ও ভলভো জাতীয় বিলাসবহুল ও এলিটশ্রেণির নতুন নতুন বাসের সংখ্যা বেড়েছে অনেক।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের দেয়া তথ্যমতে, শুধুমাত্র রাজশাহী জেলার মালিকদের গাড়ির সংখ্যা প্রায় সাতশ। দূরপাল্লার গাড়িচালকদের দক্ষতার উপর নির্ভর করে দূর্ঘটনা ও যাত্রীদের ঝুঁকিহীন কাঙ্খিত সেবার বিষয়টি। সড়কের অবস্থা যেমনই হোকনা কেনো; দক্ষ ড্রাইভারের হাতে গাড়ির ‘স্টিয়ারিং’ বা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থাকলে যাত্রীদের দুশ্চিন্তা হ্রাস পেয়ে বৃদ্ধি পায় নিশ্চয়তা। তাই দূরপাল্লার বাসগুলোতে সিনিয়র ও দক্ষ ড্রাইভারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম বলে মন্তব্য যাত্রী ও সংশ্লিষ্টদের।

ঢাকা-চট্রগ্রামে রুটে যাতায়াত করেন এমন যাত্রী সহ বেশকিছু কাউন্টার ম্যানেজারের দেয়া তথ্য মতে, দূরপাল্লার গাড়িগুলোতে দিনদিন কমে যাচ্ছে দক্ষ ও সিনিয়র ড্রাইভারদের উপস্থিতি। মাঝেমধ্যে এমনও কিছু চালকের দেখামেলে; যাদের বাস চালানোর গতিবিধি বেশ ভীতিকর।তাদের বয়সও তুলনামূলক কম। লাইট ও মাঝারি প্রকৃতির ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে ভারি গাড়ি চালানোর প্রবণতাও বেশ লক্ষ্যনীয়। বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন, রাজশাহী জেলা ট্রাফিকের 'টিআই' আনোয়ার হোসেন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সদ্যবিদায়ী জুন মাসে দেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। জুনে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬৮৯টি। এতে নিহত হয়েছেন ৬৯৬ জন, আহত ১ হাজার ৮৬৭ জন। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১০৬ জন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ আরো বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৯৬টি হয়েছে জাতীয় মহাসড়কে।

এদিকে, চলতি বছরের ৭ এপ্রিল রাজশাহীর খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় বাস-ট্রাকের সম্মুখ সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা গ্রামীণ ট্রাভেলসের একটি যাত্রীবাহী বাস অটোরিকশাকে চাপা দেয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুজন। গত ১৯ মে রাজশাহীর বাঘায় যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক বাবা ও তাঁর পাঁচ বছর বয়সী মেয়ের পা কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ের সঙ্গে থাকা অন্তঃসত্ত্বা মাও গুরুতর আহত হন। তাঁর একটি হাত ভেঙে যায়।

গত ৯ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার কিছু কারণ শনাক্ত করেন। বেশকিছু কারণের মধ্যে তিনি দক্ষ চালকের বিষয়টিও তুলে ধরেন। সড়কের বেশকিছু সমস্যার পাশাপাশি তিনি তুলে ধরেন অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানোর মতো বিষয়গুলো। দূর্ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পাবার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে ‘দক্ষ চালক গড়ে তোলা, আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা সহ অন্যান্য কিছু বিষয়েও উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

দক্ষ চালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে প্রাপ্ত বক্তব্য ও মন্তব্যের সাথে মিল পাওয়া যায়নি বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের। অধিকাংশ বিষয়েই মেলে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য। তবে, দক্ষ চালক গড়ে তোলার বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ কিংবা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার বিষয়ে একে অপরকে দায়িত্ব নেবার কথা বলেই শেষ করেন কথা চালাচালি।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, দূরপাল্লার বাসগুলোতে চালকের কোন কমতি নেই। দক্ষ ও অভিক্ষ চালকের কিছুটা কমতি আছে বলে তিনি অকপটে স্বীকার করলেও তাতে করে যাতায়াতে তেমন কোন সমস্যা আজ অবদি সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি হেলালের। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট-কক্সবাজারের মতো অনেক দূরত্বের গাড়িগুলোতে দুজন করে চালক রাখা হয়। যারা দূরপাল্লার চালক তাদের হাত বেশ পাঁকা ও দক্ষ বলেই দাবি হেলালের। তবে, ঈদ মৌসুমে বিভিন্ন জেলা থেকে নতুন নতুন গাড়ির আগমণ ঘটে। সেখানে হয়তো দু-একটা গাড়ির চালকের আসনে কখনো কখনো জুনিয়ররা স্বল্প সময়ের জন্য স্টিয়ারিং ধরেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, রাজশাহীতে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা প্রায় ৭০০টির মতো। ট্রাক্স-টোকেন, ফিটনেস, রোড পারমিট, লাইসেন্স নবায়ন সহ আনুসঙ্গিক সেবা গ্রহণের জন্য বিআরটিএ খাতে বাস প্রতি জমা পড়ে ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়াও ট্রেনিং, দূর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রদানপূর্বক বাসপ্রতি ১৭০০ টাকা করে জমা দিতে হয়। সেহিসেবে বছর শেষে রাজশাহী জেলার মালিকদের কাছ থেকেই সরকারের রাজস্বে জমা পড়ার কথা প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এতোগুলো অর্থ সরকার গ্রহণ করার পরেও কাঙ্খিত সেবা পেতে ভোগান্তি ও কালক্ষেপন কেনো হবে? লাইসেন্স নবায়ন ও ফিটনেস-রুটপারমিটে ভোগান্তি অনেক বলে অভিযোগ সভাপতি হেলালের। নিয়মিত প্রশিক্ষণের কথা থাকলেও সেটি হয়না। দূর্ঘনার বিপরীতে অর্থ সহায়তা দেবার কথা থাকলেও ‘বিআরটিএ’ সেটি দেয়না। সভাপতি হেলালের মতো সমজাতীয় অভিযোগ তোলেন রাজশাহী জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখি।  

রাজশাহী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ ও রাজশাহী মটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে উত্থাপিত অভিযোগ ও মন্তব্যের বিপরীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) রাজশাহী সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাস প্রতি জমাকৃত বছরে ১৭০০/- টাকা সরকারি ট্রাস্টি বোর্ডে জমা হয়। কেউ যদি দূর্ঘটনার স্বীকার হন তাহলে দূর্ঘটনার ধরণ অনুযায়ী ৫ লাখ থেকে ১ লাখ পর্যন্ত অনুদান দেয়া হয়। কেউ যদি দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে; তাহলে তার পরিবারকে ৫ লাখ। গুরুত্বর আহত হলে তিন লাখ আর মাঝারি ধরণের দূর্ঘটনার স্বীকার হলে ১ লাখ নগদ অর্থসহায়তা দেয়া হয়। তবে, এই অর্থসহায়তা প্রাপ্তির বিষয়ে দাপ্তরিক একটি বাধ্যবাধকতা আছে। দূর্ঘটনায় আহত বা মৃত্যুর একমাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে যথানিয়মে এই আবেদন করতে হয়; নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করতে ব্যর্থ হলে অনুদান থেকে বঞ্চিত হতে হবে। লাইসেন্স নবায়ন-ফিটনেস ও রুট পারমিট সম্পর্কে জানতে চাইলে সহকারী পরিচালক বলেন, বিআরটিএ’র ডিজিটাল সার্ভিস হিসেবে ইজঞঅ ঝবৎারপব চড়ৎঃধষ (ইঝচ) ‘বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল বা ’বিএসপি’ ও বিআরটিএ সেবা নামের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ও অ্যাপস চালু আছে। সেবাগ্রহীতা ও চালক, মালিক, যানবাহন ডিলার হিসেবে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স, স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন, ডুপ্লিকেট ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং সকল প্রাসঙ্গিক পরিষেবা নিবন্ধনের জন্য বিআরটিএ অনলাইনে বিএসপি অ্যাকাউন্ট খুলে অতিসহসায় যে কেউ সেবা নিতে পারেন। এখানে আগের মতো নেই কোন ভোগান্তি। বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল (বিএসপি) অ্যাপস সেবার মানোন্নয়ন ও সময়ক্ষেপনে বেশ কার্যকরি ভূমিকা পালন করছে।

এই অনলাইন সেবার কারণে যে কোন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দেয়া বাবদ যে কোন অঞ্চলের রেজিষ্ট্রিভুক্ত গাড়ির ফিটনেস সেবা রাজশাহী থেকেই পাচ্ছে। এই সেবাতে কোনপ্রকার হয়রানি ও সময়ক্ষেপনের কোন সুযোগ নেই। দক্ষ চালক তৈরি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিষয়ে তিনি দৈনিক আমাদের রাজশাহীকে বলেন, এটা তো ‘বিআরটিএ’র কাজ না।

বিআরটিএ বাংলাদেশ সরকারের একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা যা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে কাজ করে। আমরা চালকদের পরীক্ষা নেয়া, সড়ক আইন সম্পর্কে অবহিত করা, শর্ট ট্রেনিং/ক্লাসের ব্যবস্থা করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স (পেশাদার এবং অপেশাদার) ইস্যু করা সহ সংশ্লিষ্ট দাপ্তরিক ও ব্যবহারিক সেবা, উপযুক্ত চালককে লাইসেন্স প্রদান ও সময়ান্তে সেটি নবায়নসহ চালক সংশ্লিষ্ট আনুসঙ্গিক কাজগুলো করে থাকি। চালকদের দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণের কোন ব্যবস্থা বিআরটিএ-তে নেই। দক্ষ চালক গড়ে তোলার জন্য যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে বা বাস মালিকরা একত্রিত হয়ে কোন ইনস্টিটিউট চালু করেন, তবে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সহোযোগিতা আমরা অবশ্যই করবো। আর যদি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমন ধরণের কোন উদ্যোগ নেন; তাহলে দায়িত্বরতরা অবশ্যই সেটি করবেন। তিনি পরিশেষে বলেন, দেশের প্রতিটি বিআরটিএ সার্কেল অফিস ও কার্যালয়ে জনবল সংকট চরমে।

কর্মকর্তা-কর্মচারি উভয় পদেই রয়েছে প্রয়োজনের চাইতে অনেক কম সংখ্যক জনবল। জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়ি না দেখে ফিটনেস নবায়নের কোন সুযোগ এখানে নেই। এসংক্রান্ত একটি ক্যাটালগ বই ডকুমেন্টকারে তৈরি করা হয়। গাড়ি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রতিমাসে কতগুলো গাড়ির ফিটনের নবায়ন করা হলো সেগুলোর ছবিসহ তারিখ অনুযায়ী বর্ণনাপূর্বক একটি ক্যাটাগল বই তৈরি করা হয়। ফিটনেসের বিষয়ে এর চাইতে বেশি স্বচ্ছতার আর কোন উদাহরণ আছে বলে মনে হয়না। আসলে কি; আমরা অনেকেই কারণে অকারণে আভিযোগ দিতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। বিগত সাত-আটমাস ধরে পূর্বের চাইতে সেবারমানে গতি বেড়েছে কয়েকগুণ বলে দাবি এডির। দক্ষ চালক ও দূর্ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, চালকরা যদি সড়ক ও ট্রাফিক আইনের মান্যতার পাশাপাশি আমাদের দেয়া দিকনির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলে তাহলে দূর্ঘটনা ঘটার কথা নয়। বাস মালিক বা নিয়োগকর্তাকেই এবিষয়গুলোর প্রতি সজাগদৃষ্টি রাখতে হবে। তবেই গড়ে উঠবে শক্তিশালী দক্ষ ড্রাইভারের নেটওয়ার্ক। এবিষয়ে আমাদের সর্বোচ্চ সহোযোগিতা থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) আবুল কালাম আজাদ।  

ট্রাস্টের টাকা থেকে অনুদান প্রাপ্তির বিষয়টি অনেকেই অবগত নন বলে দাবি রাজশাহী জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা পাখির। তার জানামতে এই ফান্ডের টাকা দূর্ঘটনায় আহত কিংবা নিহত হওয়া কোন চালক বা তাদের পরিবার কখনোই পাইনি। দক্ষ চালক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে পাখি বলেন, অনেক কাউন্টার ম্যানেজার সিনিয়র ড্রাইভারদের সাথে চরম অসদাচরণ করে। অভিযোগ আছে তাদেরকে পিয়নের মতো হুকুম করতেও ছাড়েনা। বিষয়গুলো বেশ নিন্দনীয়। এতে করে সিনিয়র চালকরা খুব বিব্রতবোধ করেন যেটা দক্ষ ও সিনিয়র চালক তৈরির পথকে রুদ্ধ করে।

দক্ষ চালক সম্পর্কে রাজশাহী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ ও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের দাবি, পিএসবি লাইসেন্সধারী ক্যাটাগড়ির চালকদেরকেই মালিকপক্ষ ঢাকা-সিলেট-চট্রগ্রাম-কক্সবাজারের মতো চ্যালেঞ্জিং সড়কগুলোতে চালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। বেশ কয়েকটি ধাঁপে যাচাই বাছাই সাপেক্ষে চালকদের নিয়োগ চুড়ান্ত করে মালিকপক্ষ। পিএসবি (চঝই) লাইসেন্স মূলত পাবলিক সার্ভিস ভেহিকেল (চঁনষরপ ঝবৎারপব ঠবযরপষব) লাইসেন্সকে বোঝায়, যা গণপরিবহন বা যাত্রীবাহী যান (যেমন বাস, ট্যাক্সি, সিএনজি ইত্যাদি) চালনার জন্য প্রয়োজন হয়। এটি পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের একটি অংশ, যা নির্দিষ্ট ধরনের বাণিজ্যিক যানবাহন চালানোর অনুমতি প্রদান করে। তাই দূরপাল্লার গাড়ির ড্রাইভারের ক্ষেত্রে অদক্ষ চালক বলার এখানে তেমন কোন সুযোগ নেই বলে দাবি তাদের।

দূরের গন্তব্যে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন যাত্রীরা মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, সড়কগুলোতে চলমান গাড়িগুলো যেভাবে নিজেদের মধ্যে বেপরোয়া গতিতে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালায়; সেটা দেখে বোজার উপায় নেই যে তারা দক্ষ। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ থাকলে এমনটা হতোনা। এছাড়াও, ‘কিং রেন্ট-এ-কার’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করা একটি ভিডিতে গাড়ির বেপরোয়া গতির মন্তব্য করতে গিয়ে লিখা হয়েছে ‘উল্টা পাল্টা বাউলী’ দিতে দিতে সামনের বাইককে ওভারটেক করতে থাকে। একপর্যায়ে বাইক চালক তার স্ত্রী ও শিশু আহরীকে নিয়ে হতচকিয়ে রাস্তার পাশে মাটিতে নেমে পড়তে বাধ্য হয়। পোস্টে আরো লিখা হয়েছে, মানুষের প্রাণ নিয়ে এদের কোন মাথা ব্যথা নেই। রাজশাহীর একটি প্রথম শ্রেণির ব্রান্ডের বাসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ। ভিডিওটি দেখলে যে কোন পথচারি ও যাত্রীর ভেতর ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করবে। 

অন্যদিকে, গেল ঈদে রাজশাহী-টু-ঢাকা রুটের একটি প্রখম শ্রেণির বাস কোন কারণ ছাড়াই রাস্তার আইল্যান্ডে একাধিকবার ধাঁকা লাগান। বিষয়টি নিয়ে যাত্রীরা বাসের কাউন্টার ম্যানেজারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগও করেছেন। বিষয়গুলো দক্ষ আর সিনিয়ররিটির বিশ্বাস ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মন্তব্য যাত্রীদের।

জানতে চাইলে, রাজশাহী জেলা ট্রাফিক পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আনোয়ার বলেন, দূরপাল্লার গাড়ির চালকরা দক্ষ না অদক্ষ সেটা বাস মালিক বা নিয়োগ কর্তাই বলতে পারবেন। আমরা চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যাচাই বাছাই করি। তবে, হালকা ও মাঝারি প্রকৃতির গাড়ির লাইসেন্সধারী ড্রাইভারকে দিয়ে ভারি ও বড় গাড়ি চালানোর প্রবণতা বেশ লক্ষ্যনীয়। এমনটা ধরা পড়লে বিষয়গুলো আইনী প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে, দক্ষ চালকের যথেষ্ট পরিমাণ অভাব রয়েছে বলেই মহাসড়কে তারা বেপোরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ চালক যেটা কখনোই করেননা। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.