রংপুরের তারাগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে এসে অপেক্ষার পর চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব)'কে না পেয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে সেবা প্রত্যাশীরা চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) মোজাহারুল ইসলাম নিয়মিত পরিষদে থাকেন না। যার কারণে সেবা নিতে এসে অপেক্ষার করে ফিরে যেতে হয় সেবা প্রত্যাশীদের। এতে হয়রানি বেড়ে যায় পরিষদে আসা সেবা প্রত্যাশী ও স্থানীয় মানুষের।
সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সেবা প্রত্যাশীরা তালা লাগায়নি। তালা লাগিয়েছে রাজনৈতিক দলের লোকজন। আমাকে পরিকল্পিতভাবে হেনস্থা করার জন্য তাঁরা এ কাজ করেছে। আমি নিয়মিত পরিষদে আসি। আমার ইউনিয়নের মানুষ জানে আমি কেমন মানুষ।
তিনি আরো বলেন, ওই সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি ও খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শতাধিক নেতা-কর্মী ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান ও এবি পার্টির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ইউনুস আলীও।
জানতে চাইলে ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘সয়ার ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য রোকেয়া খাতুনের আমন্ত্রণে তার শশুর আইয়ুব আলীর দোয়া অনুষ্ঠানে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব, ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশরা দাওয়াত খেতে যাই। ওই সময় ওই রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে চেয়ারম্যান ও আমার কক্ষে তালা দেন। চেয়ারম্যান ও সচিব অনুপস্থিতের অভিযোগটি সঠিক নয়। পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি তৈরি করে দৃষ্টিগোচরে আনার চেষ্টা হয়েছে।’
উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের নেতা আক্তারুজ্জামান বলেন, সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলট ও সচিব মোজাহারুল ইসলাম প্রায়শই অনুপস্থিত থাকেন। চেয়ারম্যান চিকিৎসকের কাজে ব্যস্ত থাকেন, আর সচিবের কোনো ঠিক ঠিকানা পাওয়া যায় না। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ কারণে সেবা বঞ্চিত জনগণের ক্ষোভ থেকেই তাদের কক্ষে তালা লাগিয়েছে। এটা রাজনৈতিক কোনো বিষয় না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী মোতাসিম বিল্লা স্বপন বলেন, আমরা চেয়ারম্যানের সাথে মতবিনিময়ের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি শত মানুষের জটলা। সেবা না পেয়ে জনতা চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষে তালা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা বলেন, বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সাথে কথা বলেছি। তালা লাগানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাই তালা ভেঙে পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানোর জন্য চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও হিসাব সহকারী ওই সময় অনুপস্থিত থাকার যে অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।