পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানায় চাঞ্চল্যকর পাবনা মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় নিশান উদ্দিন (২৫) নামের এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়াও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো: কামরুল হাসান খান এ আদেশ দেন। আদেশের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দন্ডপ্রাপ্ত নিশান আমিনপর থানার খানপুড়া পালপাড়ার মো: নূর উদ্দিনের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাবনা মহিলা কলেজের অনার্সে পড়া অবস্থায় ওই তরুণীকে বিভিন্ন সময় প্রেমের ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসত নিশান। রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় ও কলেজে যাতায়াতের সময় প্রেমের প্রস্তাবে নাজেহাল করত।
২০২৩ সালের ২৩ জুন রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে আমিনপুর থানার খানপুড়া গ্রামে ওই তরুণীর বাড়িতে গিয়ে নিশান ডাকাডাকি করে। এক পর্যায়ে সরল মনে ঘরের দড়জা খুলে দিলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে দ্রুত সটকে পড়েন। এরপর চক্ষুলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু না বলে মেয়েটি তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়। এরপর ছেলেটির বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর ভুক্তভোগী উর্মী খাতুন বাদী হয়ে আমিনপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পরের বছর ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ১১ জনের থেকে সাক্ষী গ্রহণ করে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আজকে যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দেন।
মেয়ের বাবা আব্দুল আওয়াল এ রায়ে সন্তোষ্ট প্রকাশ করে বলেন, এভাবে যদি ধর্ষণ মামলার সঠিক বিচার পাওয়া যায় তাহলে সমাজ থেকে ধর্ষণ অনেকাংশে কমে যাবে। দ্রুত ফাঁসি কার্যকর হোক এটাই এখন চাওয়া।
আসামীপক্ষের আইনজীবী সাহাবুদ্দিন সবুজ বলেন, আসামীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে আপিল করা হবে। আপিলের মাধ্যমে সাজা মওকুফ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি মো: এডভোকেট নাজমুল হোসেন শাহীন বলেন, এটা একটি ঐতিহাসিক রায়। এই রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। এটার মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।