জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দুই শিক্ষকের ওপর ছাত্রদল নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির দুই সদস্য পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগকারীরা হলেন- জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন (কমিটির আহ্বায়ক) এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদদীন।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই তো এই ঘটনার বিচারপ্রার্থী। এমন পরিস্থিতিতে তদন্ত কমিটিতে আমার থাকা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমি এখন নিরপেক্ষভাবে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের হয়ে কথা বলতে পারছি।’
তিনি আরও জানান, কোষাধ্যক্ষকে আহ্বায়ক করে ইতোমধ্যে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক মোশাররফ ও অধ্যাপক রইছ উদদীন পদত্যাগ করায় তাদের স্থলাভিষিক্ত করে নতুন কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে জবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীনকে এবং সদস্য হিসেবে আনা হয়েছে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিনকে।
ছাত্রদলের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে বিরাজ করছে উত্তেজনা। বিচার দাবিতে সরব হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রোববার সকাল থেকেই ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করেন। তারা দ্রুত বিচার দাবিতে প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে হামলার ঘটনা ঘটে। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে একাধিক সহপাঠীর ওপর চড়াও হন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে এলে বিভাগের দুই শিক্ষক—ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. এ কে এম রিফাত হাসান ও সহকারী প্রক্টর মো. শফিকুল ইসলাম—তাদেরও গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
একইসঙ্গে বাগছাসের জবি শাখার সভাপতি মো. ফয়সাল মুরাদ, মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুককেও ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে হামলার শিকার করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বর্তমানে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত বিচার নিশ্চিত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ছে।