× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

​সীতাকুণ্ড মহন্তের হাট গণহত্যা

শহীদ জহুরুল হকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি পরিবারের

মোহাম্মদ জামশেদ আলম,সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।

১৩ জুলাই ২০২৫, ২০:১১ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

১৯৭১ সালের ৪এপ্রিল মহান মুক্তিযুদ্ধের এক ভয়াল দিন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মহন্তের হাটে সেদিন ছিল সাপ্তাহিক হাটবার, বাজারে প্রচুর মানুষের সমাগম ছিল। অন্যান্য বাজারে মত জমেছিল লবণ ও শুটকির বাজার, সাধারণ মানুষের ভিড়ে মুখরিত ছিল পুরো বাজার। হঠাৎ আকাশে দেখা দেয় পাকিস্তানি বাহিনীরযুদ্ধবিমান, আর মুহূর্তেই নেমে আসে বিভীষিকা। নিরীহ সাধারণ জনতার ওপর ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি বর্ষণ করে পাকিস্তানি জঙ্গি বিমান।

মুহুর্তেইস্তব্ধ হয়ে যায় প্রাণবন্ত বাজারটি। রক্তাক্ত হয়ে উঠে পুরোজনপদ, মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অন্তত ২০ জন নিরীহ মানুষ। তাঁদের বেশিরভাগই ছিলেন বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও সাধারণ কৃষক। এইমর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডটি ইতিহাসে "মহন্তের হাট গণহত্যা" নামে পরিচিত হলেও, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও অনেক শহীদ পরিবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত। তাঁদেরই একজন - মুরাদপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জহুরুল হক, যিনি সেদিন মহন্তের হাটে চান্দিনা ভিটিতে লবণ ও শুটকি বিক্রি করছিলেন। পাকিস্তানি জঙ্গি বিমানের গোলার আঘাতে তিনি শহীদ হন। 

শহীদের নাতি মোহাম্মদ জামশেদ আলম বলেন— “আমার নানাজান যুদ্ধের ইউনিফর্মে ছিলেন না, কিন্তু তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদদের একজন। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে আজও তাঁর নাম শহীদ তালিকায় নেই, কেন নেই ? এটা শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো স্বাধীন বাঙ্গালী জাতির জন্য লজ্জার।” তিনি আরও জানান, শহীদ জহুরুল হকের পরিবারটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার - শহীদের ছোট ভাই সুবেদার ওয়াজিউল্লাহ ছিলেন একাধারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ ইউথ বাহিনীর সদস্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গঠিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ”হরিণা ক্যাম্পের” প্রশিক্ষক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। - শহীদের দুই ভাতিজা—আবু বকর সিদ্দিক (১৯) আলী আকবর (১৫) শহীদ হন মুক্তিযুদ্ধে। তাঁদের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজিউল্লাহ। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও রাষ্ট্র শহীদ জহুরুল হকের পরিবারটির কোন খোজ নেয়নি, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি শহীদ জহুরুল হকের নামের পাশে। শহীদ জহুরুল হকের স্ত্রী ও ৩কন্যা জীবিত রয়েছেন।

তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পরিবারটির প্রশ্ন—মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জামুকার তথ্যমতে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা লক্ষাধিক। ভূয়া ও বাটপার মুক্তিযোদ্ধারা শত শত কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার নামে লুণ্ঠন করছে বছরের পর বছর। আর প্রকৃত শহীদ পরিবার রয়ে গেল অন্তরালে। এ দায় কার? রাষ্ট্রের কাছে বিনীত জিঞ্জাসা। স্থানীয়রাও বলছেন— “জহুরুল হক শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি মহন্তের হাট গণহত্যার প্রতীক। তাঁর স্বীকৃতি মানেই "মহন্তের হাট গণহত্যা"র রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।”

পরিবারটির দাবী   শহীদের কন্যারা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জহুরুল হককে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও শহীদ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.