রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রদল নেতাকে নিয়মবহির্ভূতভাবে হলের সিঙ্গেল কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হারুনর রশীদ।
গত ৮ জুলাই থেকে হল কর্তৃপক্ষের কোন নোটিশ ছাড়াই সৈয়দ আমীর আলী হলের ১৪২ নম্বর সিঙ্গেল কক্ষে অবস্থান করছেন ছাত্রদল নেতা।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম মো. আর-রাফি খান। তিনি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হাসান মিঠুর অনুসারী। অন্যদিকে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হারুনর রশীদ বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সদস্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৯ জুলাই হল প্রাধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে সিঙ্গেল কক্ষ বরাদ্দের নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে সিঙ্গেল কক্ষে উঠতে ইচ্ছুক এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে হলের ব্যাংক হিসাবে ৫০ টাকা জমা দিয়ে নির্ধারিত আবেদন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিতে বলা হয়। তবে এই নেতা এই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে এখনো আবেদন করেননি বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক কর্মকর্তা জানান, আর রাফি খান নামের কেউ সিঙ্গেল কক্ষের জন্য এখনো আবেদন করেননি। তবে আর রাফি এর আগের বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করেছিলেন। তখনও প্রাধ্যক্ষ তাকে একটি সিঙ্গেল কক্ষ বরাদ্দ দেন। পরবর্তীতে আরেকজন দাবি করেন আর রাফি থেকে তার কোয়ালিশন ভালো। পরে প্রাধ্যক্ষ আর রাফিকে বাদ দিয়ে পুনরায় কক্ষ বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকায় রাফি অপেক্ষমাণদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল।
জানতে চাইলে ছাত্রদল নেতা রাফি খান বলেন, ‘আমি পূর্বের ওয়েটিং লিস্টে ৮ নম্বরে ছিলাম। তখন ৬জনকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আমার আগেরজন রুমে উঠবেন না। নিয়ম অনুযায়ী আমি সিট পাই। নতুন করে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে সেখানে আমি আবেদন করিনি৷ আমার পূর্বের আবেদনের ভিত্তিতেই সিট দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আবেদনের প্রয়োজন হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হারুনর রশীদ বলেন, ‘এখানে সে নিয়ম মেনেই সিট পেয়েছে। তার আগের ওয়েটিং লিস্টে থাকা শিক্ষার্থী রুমে উঠতে না চাওয়ায় তাকে সিট দেওয়া হয়েছে।’
তবে ২০ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করার সময়সীমা থাকলেও তার আগেই কিভাবে সিট পেলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘নাহ, এমন কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা সার্কুলার দেওয়া হয়নি। সিট খালি থাকলে নিয়ম অনুযায়ী আবার দেওয়া হবে।’
তবে হল প্রাধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত সিঙ্গেল কক্ষ বরাদ্দের গত ৯ জুলাইয়ের একটি নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যা হলের কর্মকর্তা মাসুম আখতারুজ্জামান হলের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপেও প্রচার করেছেন।
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জামিরুল ইসলাম বলেন, হলের সিঙ্গেল কক্ষগুলো বরাদ্দের ব্যাপারে হল প্রাধ্যক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তবে এই বিষয়ে সকল প্রাধ্যক্ষেরই সচেতন থাকা প্রয়োজন।