শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার হাজি নুরুল হক নন্নী-পোড়াগাঁও মৈত্রী কলেজে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাদশ শ্রেণির দুই পরীক্ষার্থীর বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি থেকে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পুড়িয়ে দেওয়া হয় দুটি মোটরসাইকেল, আর গুরুতর আহত হয় শাকিল নামে এক শিক্ষার্থী। সংঘর্ষের সময় কলেজে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন শিক্ষক ও ছাত্রনেতারা।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার নন্নী উত্তরবন্দ এলাকার কলেজ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। আহত শাকিলকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে চলমান একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার সময় নন্নী উত্তরবন্দ গ্রামের পরীক্ষার্থী ফরহাদ ও খালভাঙ্গা এলাকার আমিনুল ইসলাম আকাশের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে আকাশ বেঞ্চে লেগে আঘাত পায় এবং দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটে।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন ফরহাদের বন্ধু শাকিল এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায়। অভিযোগ রয়েছে, এরপর আকাশ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তারকে খবর দেয়। মুক্তার তার অনুসারীদের নিয়ে কলেজে এসে শাকিলকে মারধর করে এবং ক্ষুরাঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে বহিরাগত ছাত্রদল নেতাদের ওপর হামলা চালায় এবং কলেজ চত্বরে থাকা তাদের দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অবরুদ্ধ অবস্থায় ছাত্রদল নেতারা কলেজের অফিস কক্ষে আশ্রয় নেন। দীর্ঘ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করলে সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফসানা আল আলম ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কলেজের চার শিক্ষার্থীসহ মোট ১৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, শহর থেকে আসা বহিরাগতদের উসকানিতে এই সংঘর্ষ ঘটেছে। তাদের হামলায় স্থানীয় শিক্ষার্থী শাকিল গুরুতর আহত হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সহকারী পুলিশ সুপার আফসানা আল আলম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।