রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রবেশে কার্ড দেখানো বাধ্যতামূলক করা হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ। নড়বড়ে দেয়াল টপকে কিংবা ফাঁকা পথ দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ছেন বহিরাগতরা। এতে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের মাঝে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোভার স্কাউটস, বিএনসিসি ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে প্রবেশের সময় পরিচয়পত্র পরীক্ষা করেছেন। তবে স্কাউট সদস্যরা জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলেও ক্যাম্পাসের কিছু অংশে দুর্বল বাউন্ডারি ও খোলা প্রান্ত থাকায় সেখান দিয়ে প্রবেশ করছেন বহিরাগতরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর বহিরাগতদের ঘোরাঘুরির কারণে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করা, বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে। কেউ কেউ অশালীন মন্তব্য বা সন্দেহজনক আচরণের কথাও জানিয়েছেন।
কথা হয় মেইন গেটে কর্তব্যরত রোভার স্কাউট সদস্য রেজওয়ানুর রহমান হৃদয়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, “বহিরাগতরা দেয়াল টপকে তো ঢুকেই পড়ে, আবার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই তাদের প্রবেশ করিয়ে দেয়। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাউকে ফোন দিয়েও ঢোকে তারা। তবে প্রশাসন যদি আমাদের আরও কঠোর হতে বলে, তাহলে আমরা হব। কঠোর হলে হয়তো বহিরাগতদের প্রবেশ আরও কমানো সম্ভব হবে।”
নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের এই উদ্যোগ ভালো। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। চারপাশের দেয়ালগুলো মজবুত করতে হবে, ফাঁকা জায়গাগুলো বন্ধ করতে হবে। কারণ বহিরাগতরা আমাদের জন্য অনেক সময় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়। এদের প্রবেশ ঠেকাতে প্রশাসন ‘অটোমেটিক চেকিং সিস্টেম’ চালু করতে পারে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, “নিরাপত্তার জন্য কার্ড চেকের বিষয়টি বেশ উপকারী। কিন্তু এতে পুরোপুরি সমাধান হচ্ছে না। চারপাশে এত ভাঙা দেয়াল ও ফাঁকা জায়গা থাকলে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আমরা ছোট ছোট ভাঙা দেয়ালগুলো ঠিক করার ব্যবস্থা করব। তবে যেগুলোর জন্য বড় বাজেট প্রয়োজন, সেগুলো একটু সময়সাপেক্ষ।”