মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পদ্মছড়া চা বাগানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারী শ্রমিকরা চা পাতা তোলার কাজে ব্যস্ত থাকেন। শনিবার (২৬জুলাই) দুপুর ২টায় পাতা ওজন করে গাড়িতে তোলার জন্য শ্রমিকরা অপেক্ষা করছিলেন। এমন চিত্র ধরা পড়ে এই প্রতিবেদকের।
চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হলেও, তা যথেষ্ট নয়। তাদের মজুরি বৃদ্ধি, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো এখনো অনেকাংশে অপূরণীয়। এই কারণে, “চাপাতার ভর্তা ও আটার রুটি খেয়ে চা শ্রমিকের দিন চলে” এই প্রবাদটি চা শ্রমিকদের দৈনন্দিন জীবনের একটি কঠিন বাস্তবতা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দেয়।
সিলেট বিভাগের পর্যটন অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজারে রয়েছে ৯২টি চা বাগান। এখানকার মাধবপুর চা বাগানের কয়েকজন নারী চা শ্রমিকের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
তারা জানান, সেই সাতসকালে ঘুম থেকে উঠে করতে হয় সংসারের কাজ। বাগান দূরে হলে আগেভাগে রওনা দিতে হয়। সপ্তাহে সোম থেকে শনিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করতে হয়।
কথা প্রসঙ্গে জানা যায়, তারা কেউ সকালে খেয়ে বের হন, কারও যদি সময় না থাকে তবে ছুটতে হয় খাবার নিয়েই। মধ্যাহ্নের খাবার বলতে সঙ্গে নিয়ে যান কেউ চাল ভাজা, পান্তা ভাত, কেউবা রুটি, কেউ কেউ মুড়ি, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা কিংবা শুকনো মরিচ এবং লবণ। সেগুলির সাথে চায়ের কুঁড়ির পাতা মিশিয়ে বানানো হয় বিশেষ ধরনের চা পাতার ভর্তা (পাতিচখা)। যা তাদের মধ্যাহ্নভোজের নিত্যসঙ্গী।
স্থানীয়রা জানান, চা বাগানগুলোতে সকাল থেকে নারী শ্রমিকরা চা পাতা তোলার জন্য কাজ করছেন। তারা সাধারণত সকাল বেলাতেই কাজে যোগ দেন এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। চা পাতা তোলার কাজটি একটি কষ্টসাধ্য কাজ, যা নারী শ্রমিকরা প্রতিদিন করে থাকেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, প্রশাসন থেকে শ্রমিকদের সবসময় সহযোগিতা করা হয়। তারা বিভিন্ন সময় অসুস্থ ও সমস্যায় থাকেন। প্রশাসন তাদের খুজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে থাকে।