মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি সাথে সশস্ত্র সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ব্যাপকভাবে ফের গোলাগুলি শুরু হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ সিমান্তে লাগোয়া বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। চাকঢালা, ঘুমধুম ও দৌছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষ নিরাপদ সাথে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সীমান্তবাসী ও স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা জানিয়েছে, গত ২৪ জুলাই থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি সাথে সশস্ত্র সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের ব্যাপকভাবে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তের ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৮ ও ৪৯ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলারসংলগ্ন এলাকায় গোলাগুলি শুরু হয়। আজ সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি শুরু হয়। গোলাগুলির ঘটনায় আজ শনিবার সকালে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলির খোসা বাংলাদেশে অভ্যান্তরে এসে পড়েছে বলে জানিয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে ৬নং ওয়ার্ডের চাকঢালা সীমান্তে পূণরায় বিদ্রোহী গোষ্ঠির দুই সংগঠনের মাঝে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। মিয়ানমার অভ্যান্তরে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে সীমান্তবর্তী আকাশ কেঁপে ওঠেছে। সীমান্তের লাগোয়া বসবাসকারী নারী শিশুসহ সকলেই মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ পরিবার নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সচেতন মহল বলছে, মিয়ানমারের ভেতরে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগঠন আর এসও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে কিছু দল মিয়ানমারের সেনাজান্তা বাহিনী সহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সংঘর্ষে ভারী অস্ত্রের ব্যবহার এবং টানা গোলাগুলির ফলে পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিয়েছে। যার প্রতিধ্বনি এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা জনপদে।
চাকঢালা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, শফিউল আলম ও আবদুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ৫০ নম্বর পিলার থেকে ৪৮ নম্বর পিলার এলাকায় থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ তারা শুনেছেন।
তারা জানিয়েছে, বিদ্রোহী আরসা বাহিনী প্রতিদ্বন্দ্বী একটি দলের 'বেন্ডুলা' নামের ঘাঁটি দখলের চেষ্টা চালায়। তবে টানা বর্ষণের কারণে তা ব্যর্থ হয়।
যদিও এখনো হতাহতের কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পরিস্থিতির ভয়াবহতায় সীমান্তবাসীর মাঝে উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, একটি গুলির খোসা বাংলাদেশ সীমানার ভেতরে এসে পড়েছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তাছাড়া মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের বিষয়টি আমরা অবগত।
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উপজেলা প্রশাসন ও সীমান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৪ বিজিবি। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পাশাপাশি ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।