ছবিঃ সংগৃহীত।
ছাত্র জনতার অভূত্থানে কুষ্টিয়ায় নিহত শিশু আব্দুল্লাহর পিতা লোকমান হোসেন অভিযোগ করে বলেছেন, মূল আসামীকে বাঁচাতে অনেকগুলো নিরিহ মানুষকে আসামী করা হয়েছে শহীদ আব্দুল্লাহ হত্যাকান্ডে।
তিনি বলেন ‘৫ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার সামনে আন্দোলন চলছিল।
এসময় আমার ছেলে ১৩ বছর বয়সী আব্দুল্লাহকে হাজার মানুষের সামনে গুলি করে হত্যা করেছে এসআই সাহেব আলী। তিনি আরও বলেন, আমি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমার ছেলে আব্দুল্লাহও হাসপাতালে আমার কাছে ছিল। সে ভাত খাওয়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে বের হয়।
এরপর কুষ্টিয়া মডেল থানার সামনে আন্দোলনে যুক্ত হয়। আন্দোলনরত অবস্থায় আমার ছেলেকে ধরে দুই হাত ভেঙে দিয়েছিল এসআই সাহেব আলী। এরপর বুকে গুলি করে হত্যা করে। আওয়ামী লীগের হানিফ এমপি ও তার ভাই আতার নির্দেশে এসআই সাহেব আলী আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি, দ্রুত যেন এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়। সাহেব আলী আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। তার গুলিতে অনেকে আহত এবং নিহত হয়েছেন।
আব্দুল্লাহ হত্যার ঘটনায় ১৫ আগস্ট রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা হয়।
এই মামলার বিষয়ে লোকমান বলেন, আমি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। এ সময় দলীয়ভাবে এই ঘটনায় মামলাটা করা হয়েছিল। যার কারণে এই মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছিল, না হয়েছিল আমি জানতাম না। এরপর ট্রাইব্যুনাল থেকে লোক এসেছিল। ওদের কাছে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছি। সাহেব আলী, আওয়ামী লীগের সদরের এমপি হানিফ, তার ভাই আতা ও মানব চাকির নামে অভিযোগ দিয়েছি।
এসআই সাহেব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, সাহেব আলী আন্দোলনকারীদের ওপর নিজে গুলি চালিয়েছে। আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গুলি চালিয়েছে। নারী ও পুরুষদের মারপিট করেছে। আমার ছেলের মতো কয়েকজনকে হত্যা করেছে।
এটা সবাই জানে, সবাই দেখেছে। সেই খুনী সাহেব আলী কিভাবে এখনো পুলিশে চাকরি করে? সে বর্তমানে খাগড়াছড়িতে কর্মরত আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই মুস্তাফিজও সাহেব আলীর সঙ্গে থেকে সব অপরাধ করেছে। সাহেব আলী ও মোস্তাফিজ দুজনে মিলেই এ সমস্ত সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড করেছে। তাদের শাস্তি চাই।
তারা কিভাবে এখনো চাকরি করে? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুল্লাহ হত্যাকান্ডের পর তার বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে একটি পক্ষ ২ জন সিনিয়র সাংবাদিক সহ ৩ জন সাংবাদিক একজন কলেজের শিক্ষক সহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিসহ মোট ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০-২০ জনকে। মামলার বাদী আব্দুল্লাহর বাবা লুকমান হোসেন। তবে লোকমান হোসেন দাবী করেন মূল আসামী দারোগা সাহেব আলীকে বাঁচাতে গিয়ে সাংবাদিক কলেজ শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তিনি বলেন আমি ছেলের মৃত্যুূতে অসুস্থ্ ছিলাম আমি বিষয়টি বুঝতে পারিনি। আমি সঠিক বিচার চাই ও মূল হত্যাকারী ও হুকুমদাতার ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের সাবেক উপ পরিদর্শক (এসআই) সাহেব আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh