ভারি কিংবা মাঝারি ধরনের বৃষ্টিতেই নিমজ্জিত হতো রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রবেশদ্বারের মূল সড়কসহ প্রায় সমস্ত শিক্ষা বোর্ডের চলাচলের রাস্তাগুলো। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে কর্মরতরা ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা সেবা গ্ৰহীতারা বর্ষারদিন পরতেন চরম ভোগান্তিতে। বৃষ্টির দিন গাড়ি ব্যতীত শিক্ষা বোর্ডে প্রবেশ করাটা প্রায় অসম্ভব ছিল।
বাংলার প্রকৃতির নিয়মানুযায়ী আষাঢ়-শ্রাবন এই দুইমাস বর্ষা মৌসুম। তাই স্বাভাবিক কারনে মাসখানেক ধরে রাজশাহীতে প্রায় প্রতিদিনই আকাশ থেকে ঝড়ছে বর্ষার পানি। বৃষ্টির সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভোগান্তি। শিক্ষা বোর্ডে আসা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ সেবাগ্ৰহীতাদের জলাবদ্ধতা থেকে কিছুটা পরিত্রাণ দিতে অবশেষে সোমবার (২৮ জুলাই) শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নিজ খরচে ভাড়া করা লেবার ও ইন্সট্রুমেন্ট দিয়ে পরিস্কার করলো রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গভীর ড্রেন। সোমবার দুপুরেও রাজশাহী হয়েছে মুশলধারে বৃষ্টি। বৃষ্টির মধ্যেই শ্রমিকরা কাজ সমাপ্ত করেন।
শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, শিক্ষা বোর্ডের পূর্বদিকের প্রধান ফটন ও সীমানা প্রাচীর ঘেরা রাসিকের বড় ও গভীর ড্রেনটি বছরের পর বছর পরিস্কার করা হয়না। ড্রেনটিতে ময়লা আবর্জনা আর কাদায় পরিপূর্ণ ছিল। ড্রেনে জমে থাকা ময়লার জন্য শিক্ষা বোর্ড থেকে পানি নিষ্কাশন হতোনা। বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধ পানি নিষ্কাশন হতে কয়েকঘন্টা সময় লাগতো। জমে থাকা পানির জন্য শিক্ষা বোর্ডে আসা সেবাগ্ৰহীতারা পড়তেন চরম ভোগান্তিতে। এছাড়া কর্মরতরাও এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যেতে পারতোনা জমে থাকা পানির জন্য।
আমি এখানে যোগদানের আগে থেকেই এই ভোগান্তির বিষয়টি সিটি করপোরেশনকে একাধিকবার অবগত করা হয়েছিল। কিন্তু আজ অবদি সমস্যার কোন সুরাহা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই শিক্ষা বোর্ডের নিজস্ব তহবিলে থেকে অর্থ খরচ করে ড্রেনে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা আর কাদাগুলো অপসারণ করা হলো বলে জানান রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর আ.ন.ম. মোফাখখারুল ইসলাম ।
নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কর্মরতদের কয়েকজন জানান, শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে আরসিসি ঢালাইয়ের একটি রাস্তা নির্মাণ করেছিলেন। রাস্তাটি টেন্ডারবিহীন করার কারনে ঐসময় দুদক কর্তৃক একটি মামলা হয়। রাস্তাটি বেশ মজবুদ হলেও পরিকল্পনাবিহীন করার কারনে একদিকে কিছুটা ঢালু হয়ে যায়। যার কারণে মাঝারি গড়নের বৃষ্টি হলেই রাস্তার পূর্বদিক থেকে শুরু করে প্রায় আশি শতাংশ জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। শিক্ষাবোর্ডের বিভিন্ন কাজ না করেই সরকারি প্রায় ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ ও সাবেক সচিব ড. আনারুল হক প্রামানিকসহ ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারি ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছিল। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো করা হয়। তিনটি মামলারই বাদী ছিলেন ওই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এসব মামলা করা হয়।