জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ (জবি) দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারেনি ইসলামী ছাত্র শিবির। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আবারও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সক্রিয় হয়ে উঠছে সংগঠনটি। বিশেষ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের তৎপরতা চোখে পড়ার মতন।
চলতি বছর রমজান মাসে জাঁকজমকপূর্ণ ইফতার মাহফিল আয়োজন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবির। এরপর ফল উৎসব, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা এবং সর্বশেষ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য নবীনবরণ আয়োজন ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
নবাগত শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত এই নবীনবরণে ব্যাপক আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো। জানা গেছে, এই আয়োজনেই ব্যয় হয় প্রায় ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা। এই অঙ্কের অর্থ খরচ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন শিবির এত বিপুল অর্থের জোগান পেল কোথা থেকে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, এত অল্প সদস্য নিয়ে এতো বড় আয়োজন প্রশ্নবিদ্ধ। সদ্য বিলুপ্ত আসাদুল-রিয়াজুল কমিটিতে সদস্য ছিল মাত্র ১৪ জন। আর নতুন রিয়াজুল-আরিফ নেতৃত্বাধীন কমিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ সদস্য তালিকা প্রকাশ করেনি। এমন পরিস্থিতিতে এত বড় আয়োজনের অর্থের উৎস স্বচ্ছ নয় বলেই মনে করছেন অনেক শিক্ষার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, "শিবিরের সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতে সদস্য ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। নতুন কমিটিও এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হয়নি। তারা সবসময় বলে আসছে সদস্যদের থেকে প্রাপ্ত চাঁদা সংগ্রহ করে এসব আয়োজন করে থাকে। তাহলে ছাত্র অবস্থায় শিক্ষার্থীরা এত বিপুল অর্থ খরচ করলো কীভাবে"?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, "একটি ছাত্র সংগঠন, যার কার্যক্রমই ছিল অনেকটা অপ্রকাশ্য, তারা এত বড় বাজেটের অর্থ কোথা থেকে পেল, তা অবশ্যই স্বচ্ছভাবে জানানো উচিত। নাহলে এটিকে নানা রকম গোপন আর্থিক সংযোগের সন্দেহ থেকে মুক্ত করা যাবে না।"
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, "আমাদের আয়ের উৎস পরিষ্কার। আমাদের আয় এবং ব্যয় সব সময় নির্ধারিত খাতেই হয়ে থাকে। এখন গোপন কোনো আয় বা ব্যয় নেই আমাদের। আমাদের সংবিধানের আলোকে খাত সমূহ এবং আমাদের সাবেক ভাইদের থেকেই আমাদের যাবতীয় আয় হয়ে থাকে। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়।"