নিউ ইয়র্কের ম্যানহ্যাটনের একটি বহুতল ভবনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) একজন কর্মকর্তা ও সন্দেহভাজন হামলাকারীসহ কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। জানা গেছে, তিনি মোলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন। তার স্ত্রী বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দিদারুল ইসলামের মরদেহ বর্তমানে কলম্বিয়া হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তার মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিউ ইয়র্ক সিটির ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউতে। এনওয়াইপিডি কমিশনার জেসিকা টিশ জানান, এই ঘটনা এখনও সক্রিয় তদন্তাধীন রয়েছে।
নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, হামলাকারী একটি ডাবল-পার্ক করা কালো বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে এম৪ রাইফেল হাতে বেরিয়ে আসে এবং ভবনের লবিতে প্রবেশ করে। সেখানে সে দিক পরিবর্তন করে একজন পুলিশ কর্মকর্তার ওপর গুলি চালায়।
পরে হামলাকারী নিচতলায় একজন নারী ও একজন নিরাপত্তাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে এবং ভবনের ৩৩ তলায় উঠে আরও একজন পুরুষকে হত্যা করে। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম শনাক্ত করা হয়েছে শেইন তামুরা (২৭), যার ঠিকানা লাস ভেগাসে। তার হামলার উদ্দেশ্য এখনও তদন্তাধীন।
নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬) ছিলেন দুই সন্তানের জনক এবং তার স্ত্রী গর্ভবতী। নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দিদারুল ছিলেন বাংলাদেশি অভিবাসী যিনি নিউ ইয়র্কবাসীদের জীবন রক্ষায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
"আজকের এই মর্মান্তিক বন্দুক সহিংসতায় আমরা চারজন নিরীহ মানুষকে হারিয়েছি, যার মধ্যে আমাদের একজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন," বলেন মেয়র অ্যাডামস।
সিএনএনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভবনে রাইফেল হাতে ঢোকার সময় হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যা ভবনের নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণ করা হয়।
৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউ নামের এই বহুতল ভবনটি সেন্ট্রাল পার্কের দক্ষিণে এবং রকফেলার সেন্টারের কাছাকাছি অবস্থিত। এখানে ব্ল্যাকস্টোন, কেপিএমজি, ডয়চে ব্যাংক এবং এনএফএল সদরদপ্তরের মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস রয়েছে।
এদিকে, সোমবার সকালে নেভাদার রেনো শহরে গ্র্যান্ড সিয়েরা রিসোর্ট ক্যাসিনোর পার্কিংয়ের ভ্যালেট স্টেশনে আরেকটি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন নিহত হন এবং দুইজন গুরুতর আহত হন। পুলিশ হামলাকারীকে গুলি করে আহত করে। হামলাকারীর পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা সম্ভবত এলোমেলোভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন।