রংপুরের তারাগঞ্জে ইরফান বাবু (১১) নামের এক পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়া এই শিশুটির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর বুড়াপীর মাঠ থেকে।
নিহত ইরফান তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বসপাড়া গ্রামের দিনমজুর ভ্যানচালক সফিকুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় বুড়িরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে স্কুল থেকে ফিরে গোসল ও খাওয়া-দাওয়া শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাবার পুরোনো ভ্যান নিয়ে বের হয় ইরফান। এর পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। রাতভর খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা মসজিদের মাইকেও ঘোষণা দেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে খবর আসে ঘনিরামপুর বুড়াপীর মাঠে একটি পুকুরপাড়ে শিশুর গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। সেখানে গিয়ে ইরফানের পরিবার তার মরদেহ শনাক্ত করে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
শোকে পাথর ইরফানের বাবা সফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোর বাবাটা কারো ক্ষতি করে নাই। তোমরা যদি ভ্যানটাই নিবার চান, ভ্যানটা নিনেন হয়, মোর বাবাটা জবাই করনেন কেন? মোর কলিজাটাক মারার কি দরকার আছিল। মুই কার কাছে বিচার চাইম?’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজিত রায় বলেন, ‘ইরফান ছিল অত্যন্ত মেধাবী ও ভদ্র ছাত্র। ক্লাস রোল ২৪। পরিবারের অভাব দূর করতে ছোট বয়সেই বাবার ভ্যান নিয়ে বের হতো। এভাবে তাকে হত্যা করা মর্মান্তিক। আমরা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে শিশুটির গলা কাটা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।’
স্থানীয়রা বলছেন, শিশু ইরফান হত্যাকাণ্ড শুধু একটি পরিবারের নয়, গোটা সমাজের বিবেককে নাড়া দিয়েছে।
তবে, গত চার দিনের ব্যবধানে চারটি চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে উপজেলা জুড়ে। এতে শঙ্কিত স্থানীয় মানুষজন। প্রশাসনের দুর্বলতা বলে দেখছেন তারা।