× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে করা চাঁদাবাজির মামলা রেকর্ডের আগেই আসামীর হাতে এজাহার কপি; এসআই ক্লোজড

রাজশাহী ব্যুরো।

২৯ জুলাই ২০২৫, ১৮:৫০ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলা রেকর্ড হওয়ার আগেই অভিযুক্তের হাতে পৌঁছে যায় এজাহারের কপি। এমন অস্বাভাবিক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ভেতরে-বাইরে।

রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানার এক এসআই’র বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। গত ২৩ জুলাই রাতে লিমনের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে একটি মামলা করেন রাজশাহীর ডেভেলপার ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান। মামলায় লিমনসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়, অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০ জনকে।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা লিমনকে এজাহার কপি দেন বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম রকিবুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানির পর এসআই রকিবুলকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। চাঁদাবাজির মামলার আসামী এমদাদুল হক লিমনের রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব।


মামলা থানায় রেকর্ড হওয়ার আগেই এসআই রকিবুল ইসলামের পক্ষ থেকে সেই মামলার এজাহার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এমদাদুল হক লিমনের কাছে। শুধু তা-ই নয়, মামলার বিষয়ে তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয়, যার ভিডিও ধারণ করে রেখেছিলেন লিমন নিজেই। পরে ছড়িয়ে দিয়েছেন ছাত্রদলের এই নেতা।

লিমনের প্রকাশ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কথোপকথনের শুরুতে লিমন ‘ভাই, আসসালামু আলাইকুম’ বলে এসআই রকিবুলকে সালাম দেন। রকিবুল সালামের জবাব না দিয়ে বলেন, ‘মামলা রেকর্ড হচ্ছে, হচ্ছে। রেকর্ডটা করতে দে।’ লিমন জানতে চান, ‘রেকর্ড হচ্ছে?’

জবাবে এসআই রকিবুল বলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ।’ লিমন জানতে চান, ‘আচ্ছা, ওর (মোস্তাফিজুর রহমানের) মামলাডা হলো, কে কে ভাই বলেন তো একটু। বলা যাবে?’ এসআই বলেন, ‘তুই ফোন দিছিস তোরপরে আমি গেছি। যায়ে এজাহার নিসি, তোরে দিসি। আমি জানি? কমিশনার অফিস থেকে এজাহার লিখিসে।’ লিমন প্রশ্ন করেন, ‘ওখানেই এজাহার লিখেছে? কমিশনার অফিসে?’ এসআই বলেন, ‘হ্যাঁ, ওখান থাইকা অফিসে থেকে এজাহার পাঠায়ে দিসে। অপারেটর তাই কলো যে স্যার, পেনড্রাইভে করে এজাহার পাঠায় দিসে ফোর্স দিয়ে।’

লিমন বলেন, ‘ও, কমিশনার নিজেই লিখেছে?’ এসআই বলেন, ‘তা জানি না। সে (পুলিশ কমিশনার) তো আর নিজে লেখে না। ওই অফিস (আরএমপি সদর দপ্তর) থেকে পাঠায়ছে। আমি কাজ করতেছি, ফ্রি হয়ে ফোন দিচ্ছি। রাখো।’ এরপর দুজনে ফোন রেখে দেন।

ভিডিওটি ভাইরাল হলে আরএমপির ভেতরে আলোচনার ঝড় ওঠে। শুরু হয় অভ্যন্তরীণ তদন্ত। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা মিললে এসআই রকিবুলকে সোমবার (২৮ জুলাই) বোয়ালিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে পাঠানো হয়।

পুলিশের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এসআই রকিবুল বোয়ালিয়া থানায় দায়িত্ব পালনকালে অপরাধীচক্রের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। তাকে ঘিরে আগে থেকেই নানা অভিযোগ ছিল। বিভিন্ন সময় ‘আওয়ামী দোসর’ বানিয়ে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার সকালে এসআই রকিবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনেই ফোন কেটে দেন।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, “এসআই রকিবুলের কার্যক্রম সন্তোষজনক ছিল না। ভিডিও এবং এজাহার আগেভাগে পাঠানোর বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রমাণ মিললে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “পুলিশ কমিশনারের অফিস থেকে কোনো মামলার এজাহার পাঠানো হয় না। থানায় গিয়ে বাদী নিজে অভিযোগ দাখিল করেন এবং ওসি সেটি রেকর্ড করেন। কেউ চাইলে সহায়তা নিতে পারেন, কিন্তু কমিশনার অফিস থেকে সরাসরি এজাহার পাঠানোর দরকার নেই।’

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.