ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় অবৈধ মাছ শিকারের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় ৬০টি চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে তা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া নিষিদ্ধ ভ্যাশাল জাল ব্যবহার করে পোনা মাছ নিধনের অপরাধে গৌরাঙ্গ মালো (৪২) নামে এক জেলেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিছুর রহমান বালীর নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন বিল, খাল ও জলাশয়ে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সহযোগিতা করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহ্ মো. শাহরিয়ার জামান সাবু এবং স্থানীয় মৎস্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
অভিযান শেষে ইউএনও মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, অবৈধ উপায়ে মাছ আহরণ মাছের প্রজনন ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে চায়না দুয়ারী ও ভ্যাশাল জালের মাধ্যমে পোনা মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী নির্বিচারে ধ্বংস হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে মাছের উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, সালথা উপজেলার জলাশয়গুলোতে জেলেরা অবৈধ জাল ব্যবহার করে মাছ ধরছে—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে চায়না দুয়ারী জাল ব্যবহারকারী কাউকে পাওয়া না গেলেও এগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ধ্বংস করা হয়। তবে একজনকে পোনা নিধনের দায়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহ্ মো. শাহরিয়ার জামান সাবু বলেন, মৎস্য আইনে নিষিদ্ধ এসব জাল দিয়ে মাছ ধরলে শুধু পোনা নয়, জলজ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এই ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরলে আগামীতে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও জানান, মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য নিয়মিতভাবে এমন অভিযান চলবে এবং কেউ অবৈধ উপায়ে মাছ ধরলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সচেতন মৎস্যজীবীরা জানান, এসব অভিযান খুবই সময়োপযোগী। প্রশাসনের এমন উদ্যোগে জলজ সম্পদ রক্ষা পাবে এবং মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো সালথা উপজেলাতেও অবৈধ চায়না দুয়ারী ও ভ্যাশাল জাল দিয়ে মাছ ধরার প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে এ ধরণের কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে মাছের সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।