সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা হচ্ছে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি। যার জন্য গোয়াইনঘাট উপজেলা কে বলা হয় পর্যটনের গর্ভধারিনী। নদীমাতৃক এ উপজেলা খনিজ সম্পদে ভরপুর সবুজ প্রকৃতির আচ্ছাদনে ঘেরা পরতে পরতে প্রাকৃতিক রূপ সৌন্দর্যের ডালিমেলা জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, মায়াবী ঝর্ণা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের নির্দেশনের জন্য দেশ-বিদেশে বেশ পরিচিত রয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলার।
এই উপজেলার আরেক বিস্ময় অপরূপ সৌন্দর্যের নির্দেশন লক্ষণ ছড়া। পাহাড়ের বুকে গাঢ় সবুজের আস্তরণ। পাহাড়ের বুক চিড়ে চলেছে শীতল স্বচ্ছ জলরাশি। পাথর ছড়ানো আকাশে নীলের ছায়া। রূপ-লাবণ্যে যৌবনা লক্ষণছড়া পরতে পরতে সাজিয়ে রেখেছে সম্মোহনী সৌন্দর্য্য। যান্ত্রিক কোলাহল থেকে মুক্ত নির্জন অরণ্যের সাহচার্য পেতে লক্ষণ ছড়ার বিকল্প নেই। আছে সবুজের সমারোহ, দিগন্ত বিস্তৃত সাদা মেঘের খেলা, পাথর ছড়ানো সাদা জলরাশি, পাখিদের কলতান। প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণ পিপাসুদের মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই!
জায়গাটি সমতলের মত হওয়ায় ভ্রমন পিপাসু আসা পর্যটকদের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য অনেক স্বাচ্ছন্দের হবে।
"লক্ষণ ছড়া" এবং "পান্তুমাই" সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে অবস্থিত দুটি পাশাপাশি সুন্দর স্থান। পান্তুমাই একটি ঝর্ণা, যা "বড়হিল ঝর্ণা" নামেও পরিচিত। আর লক্ষণছড়া হল একটি পাথুরে এলাকা, যা পান্তুমাই ঝর্ণার কাছেই অবস্থিত এবং অনেকটা বিছানাকান্দির মত দেখতে। এই দুটি স্থান একসাথে একদিনেই ঘুরে আসা যায়।
পান্তুমাই ঝর্ণা:এটি গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি জনপ্রিয় জলপ্রপাত। ভারতের সীমান্ত লাগোয়া এই ঝর্ণাটি "বড়হিল ঝর্ণা" নামেও পরিচিত।
লক্ষণছড়া:পান্তুমাই ঝর্ণার কাছেই এই পাথুরে এলাকাটি অবস্থিত। এখানে ভারতের ঝর্ণা থেকে বয়ে আসা জলধারা পাথরের উপর দিয়ে বয়ে যায়, যা দেখতে অনেকটা বিছনাকান্দির মত।
ভ্রমণ:পান্তুমাই এবং লক্ষণছড়া দুটো স্থানই সিলেট শহর থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত। সিলেট থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এসে নৌকা অথবা অন্য কোনো যানবাহনে করে এখানে যাওয়া যায়। পান্তুমাই এবং লক্ষণছড়া একসাথে একদিনেই ঘুরে আসা সম্ভব।
যেভাবে যাবেন:সিলেট শহর থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এসে, পান্থুমাই যাওয়ার পথে অথবা পান্থুমাই থেকে ফেরার পথে লক্ষণছড়া ঘুরে আসা যায়। পান্থুমাই থেকে হেঁটে অথবা স্থানীয় যানবাহনে করে লক্ষণছড়ায় যাওয়া যায়।
স্হানীয় বাসিন্দা তরুণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নাজমুল ইসলাম রিপন বলেন, গোয়াইনঘাট উপজেলায় যে কয়টি পর্যটন স্পট রয়েছে তার মধ্যে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য লোভনীয় স্থান লক্ষণ ছড়া। লক্ষণ ছড়ার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবে না এমন কথা বলতে পারবে না। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা একটু অনুন্নত হওয়ায় লক্ষণ ছড়ার পরিচিতির পরিধিটা একটু কম। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে কোন কার্পণ্য করে না। প্রতিদিন বিকাল বেলায় স্থানীয়দের উপস্থিতিতে মুখর থাকে লক্ষণ ছড়া। মায়াবী ঝর্ণার চাইতে এই ছড়ার সৌন্দর্য আরো বহুগুণ।
সরাসরি ব্রীজের উপরে উঠে ছবি তোলা ও সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকেও পর্যটক আসেন,তবে তা খুব কম। লক্ষণ ছড়া আসলে পান্তুমাই বিছনাকান্দি তিনটি পর্যটন স্পট একসাথে ভ্রমন করা যাবে। তিনি আরো বলেন, সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এটি হতে পারে গোয়াইনঘাট উপজেলার একটা সম্ভাবনাময়ী পর্যটন স্পট।