ছবিঃ সংগৃহীত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় ছয় মাস আগে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও কাজের অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ, যা নিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সঠিক তদারকি থাকলে এই কাজ দুই মাসেই শেষ করা সম্ভব হতো। কিন্তু প্রকল্পের ধীরগতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, সাংস্কৃতিক ও সংগঠনিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা কাজের ধীরগতির পেছনে প্রশাসনিক জটিলতাকে দায়ী করেছেন। বিশেষ করে অর্থ ছাড়, বিল অফ কোয়ান্টিটি (বিওকিউ) অনুমোদন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক সংশোধিত ওয়ার্ক অর্ডার জারি না হওয়াকে কাজের গতি কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় জবির কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন টয়লেট নির্মাণে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এই অর্থ ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে খরচের শর্তে মঞ্জুর করা হয়।
অডিটোরিয়াম সংস্কার অসম্পূর্ণ থাকার কারণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বাধ্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন ও বিভাগগুলো। জবি ক্যারিয়ার ক্লাবসহ একাধিক সংগঠনের কার্যক্রম এতে ব্যাহত হয়েছে।
বিরোধী বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, “আজ সিএসই বিভাগের কনফারেন্স রুমে একটি শিক্ষক-আয়োজিত অনুষ্ঠান হয়েছে, যেখানে মাত্র ৬০-৭০ জনের জায়গা ছিল, অথচ উপস্থিত ছিলেন ১৫০ জনের বেশি। ফলে অনেকেই স্থানাভাবে চলে যেতে বাধ্য হন। যদি কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম সচল থাকত, তাহলে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো যেত।”
প্রকল্পে নিয়োজিত এক শ্রমিক বলেন, “সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে এক মাসেই কাজ শেষ করা যেত। কিন্তু কোম্পানি কাজটিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, শ্রমিক কম এবং নির্দেশনা বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। কোনো পরিকল্পিত ম্যানেজমেন্ট নেই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি জানান, “একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে কোষাধ্যক্ষ কনভেনর এবং আমি সদস্য। ইতিমধ্যে আমরা সিটি কর্পোরেশন ও ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং দুইটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমার বিশ্বাস, দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব।”
সাইট ইঞ্জিনিয়ার সেলিমুজ্জামান বলেন, “নতুন ওয়ার্ক অর্ডার সিটি কর্পোরেশনে জমা দেওয়া হয়েছে। ছাদে বড় ধরনের ফাটল থাকায় তা মেরামতের প্রক্রিয়াও সময়সাপেক্ষ। অর্থ প্রদান ও অনুমোদনের বিষয়গুলো ঝুলে আছে। ক্যাম্পাসের সাম্প্রতিক অস্থিরতা ফাইল সই করাতেও সমস্যা সৃষ্টি করেছে।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থাপতিকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “যদি সিটি কর্পোরেশন সময়মতো অর্থ দেয় এবং তদারকি যথাযথ হয়, তাহলে দুই মাসেই কাজ শেষ করা সম্ভব।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থাপতিকের প্রতিনিধি আবদুল হান্নান জানান, “আমরা মূল ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী কাজ শুরু করেছি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধিত ওয়ার্ক অর্ডার জারি করলেও তা এখনো সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অর্থ প্রদানে কোনো সমস্যা নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহেই সংশোধিত ফাইল অনুমোদন পাবে। তারপর তিন মাসের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh