মানিকগঞ্জের সিংগাইরে নিলিমা ব্যাগ মিলস লিমিটেডের প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদন কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে কারখানার মালিকের দাবি অনুযায়ী প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার (২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের ভাকুম এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর সকালে মাত্র ৫ থেকে ৬ জন শ্রমিক নিয়ে পুনরায় উৎপাদন শুরু করেছিল কারখানাটি। হঠাৎ কারখানার আইপিএস (ইনভার্টার পাওয়ার সাপ্লাই) রুম থেকে আগুন ও ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন দ্রুত পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে দুইজন শ্রমিক ছাদ দিয়ে বের হয়ে আসেন এবং বাকিদের দ্রুত নিরাপদে বের হওয়ার সহায়তা করেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং ঘন কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায়।
ঘটনার সময় নিয়মিত টহলে থাকা সাভার ক্যান্টনমেন্টের সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন। পরে সিংগাইর, সাভার চামড়া শিল্প এলাকা এবং মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কারখানার মালিক মো. আনিছুর রহমান বলেন, "এই মিলটি প্রায় আড়াই মাস বন্ধ ছিল। আজই মাত্র পাঁচজন শ্রমিক নিয়ে চালু করেছিলাম। হঠাৎ আগুন লাগার খবর শুনে আমি ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীকে জানাই এবং দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছি। আমার প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকার মালামাল আগুনে পুড়ে গেছে। তবে আল্লাহর রহমতে কেউ আহত বা নিহত হয়নি।"
সেনাবাহিনীর সিনিয়র ক্যাম্প অফিসার জাহাঙ্গীর জানান, তারা ধোঁয়া দেখে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন এবং ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করেন। তিনি বলেন, "আমরা কাঁচের জানালা ভেঙে শ্রমিকদের বের করে আনি এবং দ্রুত আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হই।"
এদিকে প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে আইপিএস রুম থেকে শর্টসার্কিটকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জেওএম তৌফিক আজমসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তিনি বলেন, "ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। সৌভাগ্যবশত কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আমরা তদন্ত করছি আগুনের সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য।"
এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা ও ধোঁয়ার পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে অনেক দূর থেকেও তা দেখা গেছে।