জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কর্মকর্তা পরিচয়ে ৫ লাখ ঘুষ নিতে গিয়ে নাজমুল হোসেন সেফিন (৩২) নামের এক যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন। রোববার রাত ১০টার দিকে গুরুদাসপুর পৌর শহরের নির্মাণাধিন মডেল মসজিদের সামনে থেকে তাকে আটক করে পরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত নাজমুল হাসানকে রাতেই থানায় হস্তান্তর করা হয়। সোমবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভূয়া এনএসআই পরিচয় দেওয়া নাজমুল হাসান গুরুদাসপুর প্রাণি সম্পদ হাসপাতালের ড্রেসার মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি পৌর শহরের খামার নাচকৈড় মহল্লার বাস করেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, চাঁদাদাবি করে নাজমুল হাসান প্রথম ৩১ জুলাই তাকে ফোন করেন। ফোনে নাজমুল দাবি করেন চলতি মওসুমে খাওয়ার অনুপযোগী চাল কিনে গুরুদাসপুর খাদ্য গুদামে মজুত করা হয়েছে। বিষয়টি দুদকের তদন্তে প্রমাণিতও হয়েছে। দুদকের তদন্তের একটি ভূয়া চিঠিও পাঠান তাকে। একপর্যায়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। নাজমুলের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা জেলা খাদ্য কমকর্তাকে জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, নাটোর জেলা খাদ্য কর্মকর্তা নাটোরের এনএসআই কার্যালয়ে বিষয়টি জানান। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় নাজমুল হাসান এনএসআই কর্মকর্তা নন। এরপর খাদ্য কর্মকর্তার সহায়তায় নাজমুলকে ধরার পরিকল্পনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সে অনুযায়ী ঘুষের ৫ লাখ টাকা দিতে স্বীকার হন খাদ্য কর্মকর্তা।
গুরুদাসপুর উপজেলা খাদ্যগুদামের প্রধান সহকারি জুলহাস উদ্দীন বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক রোববার রাতে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে নাজমুলের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে নাজমুল মোটরসাইকেল নিয়ে কালো জ্যাকেট পড়ে মডেল মসজিদের সামনে ঘুষের টাকা নিতে আসেন। এ সময় এনএসআইয়ের কর্মকর্তারা সেনাসদস্যদের সহায়তায় নাজমুলকে হাতেনাতে আটক করেন।
স্থানীয়রা জানান, গ্রেপ্তারকৃত নাজমুল হাসান এলাকায় সেফিন নামে পরিচিত। এর আগেও তিনি মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ঘটনায় একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাদের একটা সক্রিয় গ্যাং রয়েছে।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসমাউল হক বলেন, এ ঘটনায় খাদ্যগুদামের প্রধান সহকারী জুলহাস উদ্দীন বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। নাজমুল হোসেনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সোমবার সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।