× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

প্রাণ-আরএফএল ‘জবস সেলিব্রেশন’ অনুষ্ঠানের তিনদিন পরেই চাকরি প্রত্যাশিদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ

রাজশাহী ব্যুরো।

০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৭:০৪ পিএম

ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা।

বুধবার (৬ আগস্ট) রাজশাহীস্থ ‘প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ অব কোম্পানীর (বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড)’ প্রধান ফটকের সামনে পাঁচশতাধিক চাকরি প্রত্যাশি বিক্ষোভ করেন। বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল চারটা নাগাদ এই বিক্ষোভ চলে।

পার্শ্ববর্তী শাহমখদুম থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। অভিযোগ আছে, উত্তাল পরিস্থিতি শান্ত করতে সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা হাতে লাঠিসোটা নিয়েও বেশকয়েকবার শোডাউন দিয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখাপর্যন্ত কারখানার প্রধান ফটকের সামনেই অবস্থান করছিলেন বিক্ষুদ্ধ চাকরি প্রত্যাশিরা।

রাজশাহী শহর ও এর আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা চাকরি প্রত্যাশি পুরুষ ও মহিলারা বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল আটটা থেকে অপেক্ষা শুরু করেন। সময় বাড়ার সাথে সাথে তাদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। প্রায় ছয়ঘন্টা গেটের বাইরে অপেক্ষা করেও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চাকরি প্রার্থীরা দেখা করার সুযোগ না পাওয়াতে বেলা আড়াইটার পর থেকে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুই দফায় পুলিশ আসলেও শান্ত হয়নি পরিবেশ। সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি বেশ ঘোলাটের দিকে অগ্রসর হয়। ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্য মতে, আন্দোলনকারি ও বিক্ষুদ্ধ জনতাকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিপ্রায়ে কারখানায় কর্মরত কয়েশক শ্রমিক লাঠিসোটা ও লোহার রড হাতে নিয়ে কারখানার সীমানার ভেতরে নিজেদের জানান দেয়।  তাদের এই আক্রশমূলক কর্মকান্ড দেখে বিক্ষোভকারিরা আক্রোশে ফেঁটে পড়েন। তারা বিভিন্নরকম শ্লোগান দিয়ে কারখানার সামনের বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নেন।

চাকরি প্রার্থীরা উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান, গত রবিবার (৩ আগস্ট) সকালে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে এসেছিলেন। সেদিন বলা হয়েছিল বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে আসতে।

সে মোতাবেক তারা বুধবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত প্রধান ফটকের সামনে অপেক্ষায় আছেন। সাত আট ঘন্টা অতিক্রম হলেও কর্তৃপক্ষ কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এমনকি কবে আসতে হবে, কিংবা চাকরির জন্য আদো লোকজন নেয়া হবেকিনা সেটিও পরিস্কার করে কিছুই বলেনি। প্রদান ফটকের সামনে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডরা অপেক্ষা করতে বলেন সকলকে। দূরদুড়ান্ত থেকে আসা মহিলা সহ পুরুষ চাকরি প্রার্থীরা তপ্তরোদে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে থাকেন।

অনেক মহিলা সাথে করে নিয়ে এসেছেন শিশু বাচ্চাও। কারো কাছেই ছিলনা কোন খাবার দাবার। ছিলনা পানি পর্যন্ত। তাই অগ্যথা না খেয়েই সাত আটঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে রাস্তার পাশে। তারা আরো বলেন, সকালের দিকে পনেরো-বিশজন মহিলাকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিয়েছে। তারা হয়তো স্থানীয় কোন নেতার রেফারেন্সে এখানে এসেছেন বলেই আমাদের ধারণা।

চাকরি প্রত্যাশিরা আরো বলেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বেশকয়েকজন মহিলার কাছ থেকে দুই- তিন হাজার করে টাকাও নেয়া হয়েছে। অনেকের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। টেক্সটাইল মিলের প্রধান ফটকের উত্তর দিকে কোন এক দোকানে বসে একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি চাকরি প্রত্যাশিদের চাকরি দেবার প্রলোভন দেখিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নিচ্ছেন বলেও অবিযোগ অনেকের। কোন একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীরাও চাকরি প্রত্যাশিদের কাছ থেকে জমা নিচ্ছেন কাগজপত্র; পরে ফোন দিয়ে ডাকা হবে বলেও আশ্বস্ত করছেন বলেও জানান চাকরি প্রার্থীদের অনেকেই।

চাকরি দেবার প্রলোভন দেখিয়ে কে বা কাহারা এইধরনের অপকর্ম করছে সেটি জানেনা রাজশাহীস্থ  এজিএম শরিফ উদ্দীন। তবে এই ধরনের প্রলোভন থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আজ যারা এখানে বিক্ষোভ করছেন তাদেরকে আমরাতো আসতে বলিনি। তারা কাদের কথাশুনে এখানে এসেছেন সেটি আমার জানানেই। আমরা এপর্যন্ত দুই হাজার শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছি।

ক্রমান্বয়ে আরো দশহাজার শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হবে। নিয়োগের বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমার লোকবল বৃদ্ধি করবো। তবে পূর্ববর্তী সময়ে প্রতি রবি ও বুধবার যাচাই বাছাই সাপেক্ষে বিভিন্ন ট্রেডে আমরা শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছি।

এই ধরনের বিক্ষোভ একধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা। যেটা আমাদের কাম্য নয়। চাকরির নামে কেউ যেনো প্রতারিত না হয় সেলক্ষ্যে আমরা প্রধান ফটকে একটি শতর্কমূলক।

উল্লেখ্য গত শনিবার (২ আগস্ট) রাজশাহীতে দুই হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আগামী দুইবছরের মধ্যে আরো ১০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘সেলিব্রেশন-২০০০ জবস্’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রাণ-আরএফএল কর্তৃপক্ষ। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ের প্রকিউরমেন্ট শাখার উর্দ্ধতন কর্মকর্তা তোহিদুজ্জামান বলেন, বিক্ষোভের বিষয়ে আমি অবগত না। আমি রাজশাহীতে ফোন দিয়ে খবর নিচ্ছি। কিছুক্ষণ পরে তিনি ফোন দিয়ে জানান, আমরাতো কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। কিভাবে এতো লোকজন এলো সেটা আমরা অবগত না। তবে প্রত্যেককে একটি করে টোকেন দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমরা লোকবলের চাহিদা বুঝে ক্রমান্বয়ে চাকরি প্রত্যাশিদের অফিসে কল করবো। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.