বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার মেনতক পাড়া গ্রামে নবনির্মিত মেনতক পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজে চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনগণ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং গ্রামবাসী বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং বিদ্যালয়টি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিন্মমানের উপকরণ। বিদ্যালয়ের মেঝেতে সলিং কাজ ঝিড়ি পাথর এবং ঝিড়ি বালু দিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে, যা সরকারি নির্মাণ নীতিমালার পরিপন্থী। কাজ শেষ না হলেও, কাগজপত্রে বিদ্যালয়টি পুরোপুরি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, “বিদ্যালয়ের দরজা-জানালার রঙ করা হয়নি, সিলিং দেওয়া হয়নি। এছাড়াও স্ট্যান্ড, আলমারি, ব্ল্যাকবোর্ডসহ অন্যান্য আসবাবপত্রও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। পাহাড়ি এলাকায় যেভাবে ডিজাইন অনুযায়ী নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল, তা অনুসরণ করা হয়নি।”
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের মেঝেতে বড় বড় ফাঁক রয়েছে। দেওয়ালে প্লাস্টার সঠিকভাবে হয়নি। দেয়ালে প্লাস্টার এবং জানালার ও দরজা রং করা হয়নি ব্ল্যাক বোর্ড এবং পতাকা স্ট্যান্ড ও আলমার কিছু দেখা মিলিনি। বিদ্যালয়ের চারপাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকে, যেটি শিক্ষার্থীদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি করছে।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা বলেন, ২০২৪ সালের বিদ্যালয়ের কাজটি শুরু হয় এরপরে কাজ না করে রাখেন পরে আবার ২০২৫ এর কাজ শুরু করেন। কিন্তু স্কুলের অর্থ সার কবে সেটা জানি না তবে “আমরা শিক্ষার উন্নয়ন চাই। কিন্তু এমন কাজ হলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে। তাই দ্রুত পুনরায় সঠিকভাবে কাজ করার দাবি জানাচ্ছি।”
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক পাধুই ম্রো বলেন, “আমরা নিজের চোখে কাজের গুনগতমান দেখেছি। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ঠিকাদার দায়িত্বহীনভাবে কাজ শেষ করেছে।”
ঠিকাদার মোহাম্মদ জাফরকে মোটরফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কলটি ধরেননি।
এ বিষয়ে রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। খুব দ্রুত একটি তদন্ত টিম পাঠিয়ে সরেজমিনে যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।”
এই প্রসঙ্গে এলজিইডি রুমা উপজেলা উপ :সহকারি প্রকৌশলী শ্রী বিদ্যুৎচরণ ধর তিনি জানান গ্রামবাসী অভিযোগ পত্রটি পেয়েছি। বিদ্যালয়ে অসম্পূর্ণ কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য তাকে জানানো হয়েছে,এবং ঠিকাদার জাফরের বিল বন্ধ রয়েছে।বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করে অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করা হবে এবং দুর্নীতি কোন স্থান নেই বলে জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, দায়ী ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ পুনরায় মানসম্মতভাবে সম্পন্ন করা হোক।