× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

চট্টগ্রাম প্রতিদিন নিষিদ্ধ ও আয়ান শর্মাকে গ্রেফতারের দাবী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম

১০ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৩৫ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা সংক্রান্ত  মামলার আসামি ও বিতর্কিত সাংবাদিক আয়ান শর্মার গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন সনাতনী সমাজ ও চট্টলাবাসী । একই সঙ্গে ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’ ও ‘আলোকিত চট্টগ্রাম’ পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলেরও দাবি জানানো হয়েছে।

আজ রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়। কর্মসূচির আয়োজন করে সনাতনী সমাজ ও বীর চট্টলাবাসী। মানববন্ধন শেষে একই দাবিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মিথ্যা অপপ্রচার ও জন্মাষ্টমীকে ঘিরে সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা ও বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে চাঁদাবাজ খ্যাত নিউজ পোর্টাল ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’। আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার আসামি আয়ান শর্মাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।

জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের আজীবন সদস্য দোলন দেবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন
বাপ্পী দে, সব্রত আইচ, সৌরভ প্রিয় পাল, মিঠুন বৈষ্ণব, ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় চক্রবর্তী মানিক, প্রশান্ত পান্ডে, বিপ্লব চৌধুরী বিল্লু, অপু চৌধুরী আকাশ, মিটন রবি দাশ, রুবেল পাল, সৈকত বোস, প্রভাষ দাশ, সাগর দাশ, সুকান্ত তালুকদার জুয়েল, রয়েল কুমার পাল, স্মৃতি দে প্রিয়া, পান্না দাস, ডলি দাস, অপু দাস, অর্চনা দাস, মিনা বিশ্বাস প্রমুখ।

কে এই আয়ান শর্মা?

আয়ান শর্মার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদাবাজি,  ব্যবসায়ী হয়রানি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসছে। ২০০৩ সালে অসহায় মানুষের সাহায্যের জন্য কনসার্টের নামে ৩ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিলো গণমাধ্যমে। এছাড়া ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার এক পুলিশ সদস্যের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে রয়েছে ধর্ষণ, অপহরণ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মানুষকে হয়রানি, ধর্মীয় দাঙ্গার উসকানি, মাদক ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সখ্যের অভিযোগও। 

ভুক্তভোগীদের দাবি, সাংবাদিকতার মহান পেশার আড়ালে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন কথিত সাংবাদিক আয়ান শর্মা। ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মুচলেখা দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে সাংবাদিকতার সাথে তার কলঙ্কিত নাম আর জড়াবে না কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আবারও নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।

২০০৮ সালে ঢাকার একটি আদালতে এক নারী মামলা করেন বিয়ের জাল কাগজপত্র তৈরি করে স্ত্রী দাবির অভিযোগে। পরে ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সাংবাদিকতার প্রভাব ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িতদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা চালানো হয়। সংবাদ প্রকাশের নামে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের চরিত্র হনন করে থাকেন নিয়মিত। এসব আক্রমণ সাধারণত বিএনপি-জামায়াত ও বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের দিকেই পরিচালিত হয়।

পুলিশের কাছে চাঁদা দাবি (২০০৪)

২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর পাহাড়তলী থানার তৎকালীন একজন এএসআই-এর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেন আয়ান শর্মা। ওই এএসআই সাংবাদিক ইউনিয়নে অভিযোগ করলে ইউনিয়নের তৎকালীন নেতারা প্রেসক্লাব ভবনের সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে আয়ান শর্মা ও তার সহযোগীকে হাজির করেন। সেখানে অপরাধ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন কাজে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুচলেখা দেন। এ ঘটনার পর স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে তার ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হয়।

ডিবির তদন্তে চাঁদাবাজ প্রমাণ

প্রেসক্লাবে অঙ্গীকারনামা দেওয়ার জেরে আয়ান শর্মা তৎকালীন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ ও কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দেন।২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পুলিশ কমিশনার এ অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেন। একই বছরের ১৯ অক্টোবর ডিবির তৎকালীন সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার একেএম মোশাররফ হোসেন মিয়াজী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।তদন্তে আয়ান শর্মাকে “সাংবাদিক পরিচয়ধারী চাঁদাবাজ” হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয় আয়ান শর্মা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মানুষ ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের সময় নষ্ট করে। তার মিথ্যা অভিযোগ তদন্ত করে সরকারি কাগজকলম ও মূল্যবান সময়ের অপচয় ছাড়া কিছুই হয় না।

সম্প্রতি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন এই পত্রিকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। বলেন, আমরা বাংলাদেশ প্রতিদিন নাম শুনেছি। এখন শুনি অখ্যাত পত্রিকা  চট্টগ্রাম প্রতিদিন।  দৈনিক পত্রিকা হিসেবে কোনদিন ছাপানো হয় নি। চট্টগ্রাম প্রতিদিন নামের এই অনলাইন পত্রিকা দীর্ঘদিন থেকে  চাঁদাবাজি করছে। ব্যবসায়ীদের হয়রানি, চরিত্রহনন করে ব্লাকমেইল করছে। চাঁদার টাকায় বিভিন্ন রাস্ট্রবিরোধী  চক্রান্ত করছে। ‘

প্রসঙ্গত, ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন ‘ও ‘আলোকিত চট্টগ্রাম ‘ নামে দৈনিক  পত্রিকার ডিগ্লারেশন নেয়া হলেও কখনোই পত্রিকা ছাপা হয় নি। অনলাইনে খবর ছাপিয়ে দৈনিক পত্রিকা হিসেবে পরিচয় দেয় আয়ান শর্মার মালিকানাধীন  প্রতিষ্ঠান দুটি। চট্টগ্রাম প্রতিদিনে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা মার্মা বড় অংকের বিনিয়োগ করেছিলেন। অনলাইনে সম্পাদকমণ্ডলীর তালিকায় পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান  ক্যশৈহ্লা মার্মার নাম থাকলেও ৫ই আগস্টের পর থেকে তা তুলে নেয়া হয়। এছাড়া চকবাজার এলাকার যুবলীগ নেতা, মাদক ব্যবসায়ী  দেলওয়ার হোসেন ফরহাদও এই প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে জড়িত বলে প্রচার রয়েছে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.