মৌলভীবাজারের বড়লেখা সরকারি ডিগ্রি কলেজ রোড দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন পড়ে থাকায় এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। গর্তে ভরা এই রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে নিয়মিত, পায়ে হেঁটে চলাও হয়ে উঠেছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও উপজেলার উত্তরাঞ্চলের তিনটি ইউনিয়নের ৭০-৮০ হাজার মানুষের জন্য এটি একমাত্র যাতায়াত পথ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ৫-৭ বছরে রাস্তাটিতে কোনো ধরনের সংস্কার কাজ হয়নি। ফলে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির দিনে এসব গর্তে পানি জমে ডোবার রূপ নেয়, যা এখন যেন এক একটি মৃত্যুফাঁদ। অথচ, এত মানুষের কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই।
জানা গেছে, বড়লেখা পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী থেকে শাহবাজপুর বাজার হয়ে কানলি পর্যন্ত সড়কটি বিয়ানীবাজারে বিভাগীয় সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। ২০১৯ সালের পর থেকে কোনো ধরনের মেরামত না হওয়ায় পুরো সড়কে পিচ উঠে গিয়ে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বড়লেখা সরকারি ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন অংশে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে রয়েছে গভীর গর্ত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা অটোরিকশা চালকরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন। গাড়ির চাকা ভাঙা ও যন্ত্রপাতির ক্ষতি তাদের নিত্যদিনের সমস্যা। যাত্রীরাও চলাচলের সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
কলেজ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, “সকালে কলেজে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়ে যাওয়া কিংবা কাপড়ে কাদা লেগে যাওয়াটা এখন নিয়মিত ঘটনা। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য এটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ রূপ নেয়। পুরো সড়ক কাদা ও পানিতে তলিয়ে যায়। রিকশা চলাচল দূরের কথা, পায়ে হেঁটে পার হওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় হতাশ হয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ স্বরূপ রাস্তায় গর্তের মধ্যে ধানের চারা রোপণ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না হলে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার হামিদ বলেন, “রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারবিহীন রয়েছে, বিষয়টি সত্য। তবে আমরা ইতোমধ্যে এই সড়কের মেরামতের জন্য একটি প্রস্তাবনা (ইস্টিমেট) তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, জনদুর্ভোগ কমাতে অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হোক।