বিখ্যাত বাঙালি কবি সুনির্মল বসু পৈতৃক নিবাস, মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর গ্রামে।
সাহিত্যিক ও সাংবাদিক গিরিশচন্দ্র বসু ছিলেন তাঁর পিতামহ এবং প্রখ্যাত বিপ্লবী ও সাহিত্যিক মনোরঞ্জন গুহঠাকুরতা ছিলেন তাঁর মাতামহ।সুনির্মল বসু ১৯০২ সালের ২০ই জুলাই ভারতের বিহারের গিরিডি নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।
সুনির্মল বসু পিতার কর্মস্থল পাটনার গিরিডি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯২০) পাস করে কলকাতার সেন্ট পলস কলেজে ভর্তি হন, কিন্তু গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনে (১৯২১) যোগ দিয়ে কলেজ ত্যাগ করেন। কিশোর বয়স থেকে সুনির্মল বসু কবিতা লেখা ও ছবি আঁকার প্রতি সুনির্মলের ঝোঁক ছিল। তিনি কিছুদিন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আর্ট কলেজে ছবি আঁকা শেখেন। প্রবাসী পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি কবিতা, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, রূপকথা, ভ্রমণকাহিনী, কৌতুক নাটক ইত্যাদি মাধ্যমে শিশু–কিশোর উপযোগী সাহিত্য রচনা করেন।
সুনির্মল বসু তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হাওয়ার দোলা (১৯২৭), ছানাবড়া, বেড়ে মজা, হৈ চৈ, হুলুস্থূল, কথাশেখা, পাততাড়ি, ছন্দের টুংটাং (১৯৩০), আনন্দ নাড়ু, শহুরে মামা, কিপটে ঠাকুরদা (১৯৩৩), টুনটুনির গান, গুজবের জন্ম, বীর শিকারী, লালন ফকিরের ভিটে, পাতাবাহার, ইন্তিবিন্তির আসর (১৯৫০), পাহাড়ে জঙ্গলে ইত্যাদি।
সুনির্মল বসু ছোটদের চয়নিকা ও ছোটদের গল্প সঞ্চয়ন তাঁর সম্পাদিত দুটি উল্লেখযোগ্য শিশুতোষ গ্রন্থ। তার রচিত আত্মজীবনী জীবন খাতার কয়েক পাতার প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। সুনির্মল সমকালের একমাত্র শিশুতোষ পাক্ষিক পত্রিকা কিশোর এশিয়ার পরিচালক ছিলেন। ভারতের দিল্লীতে অনুষ্ঠিত প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের শিশু–সাহিত্য শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সুনির্মল বসু ১৯৫৬ সালে তিনি সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ভুবনেশ্বরী পদক লাভ করেন। যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়। জন্মিলে মরিতে হয় এই সত্যের কাছে হার মেনে ১৯৫৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কালের গর্ভে, আমরা তোমাদের ভুলবো না।