উজান থেকে নেমে আসা ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নেমে আসে বন্যা। টানা তিন দিনের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। তীব্র ভাঙ্গনে তিস্তার বুকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি ক্ষেত। বার বার ভাঙ্গনের শিকার অসহায় মানুষের বেড়েছে দূর্ভোগ। জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে ভাঙ্গন ঠেকাতে কাজ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
৩য় দফায় তিস্তা নদীর বন্যার পানি কমে যাওয়ার সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে শতবর্ষী পুরোনো বসত ভিটা। সবকিছু নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় নিঃস্ব হচ্ছে তিস্তা তীরবর্তী মানুষ।
তেমনি ভাঙ্গনের শিকার লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামের সহিজন বেগম নামের ৮০ বছর বয়সি এই বৃদ্ধা। তিস্তার ভয়াল থাবায় ০৭ বারের বেশি ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন তিনি। তবে এবার শেষ সম্বল ভিটেমাটি নদীতে ভেসে নিয়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন এই বৃদ্ধা।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, দেখা দিচ্ছে চর্মরোগ ও চুলকানির মতো সমস্যা। শুকনো খাবার ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকটে আছেন বানভাসীরা।
জেলায় ৯১৫ হেক্টর রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরবর্তী সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কুটিপাড়া, আদর্শ বাজার ও চীনাতলি, রাজপুর ইউনিয়নের তাজপুর ও কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারি, হাতিবান্ধা সিন্ধুনায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিন্তু তীব্র ভাঙ্গনে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে হারিয়ে ফেলছে জন্মভূমির ইতিহাস ও এতিহ্য তাই সবার দাবি দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, জরুরি আপদকালীন কাজের অংশ হিসেবে যেসব জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে সেসব জায়গায় জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে ভাঙ্গন ঠেকাতে কাজ করা হচ্ছে।