× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশী হচ্ছে মাছের উৎপাদন

আলিফ হোসেন,তানোর

১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৫:২৬ পিএম । আপডেটঃ ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৫:২৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত।

রাজশাহীর তানোরে লক্ষ্যমাত্রার (চাহিদা) চেয়ে বেশী হচ্ছে মাছের উৎপাদন। মানুষের খাদ্য তালিকায় অন্যতম মাছ। তানোরের মাছ চাষিরা মাছ চাষে সাফল্যের পথে। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে মাছের উৎসগুলো। নদী-নালা, খাল-বিলসহ উন্মুক্ত মাছ উৎপাদনের জায়গা এখন বিলুপ্তপ্রায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে বেড়েছে মাছের চাহিদা। এজন্য চাহিদার যোগান দিতে শুরু হয় বাণিজ্যিকভাবে মাছচাষ। রাজশাহীর অঞ্চলের অন্যতম মাছচাষ অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত তানোর। 

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার আয়তন প্রায় ২৯৫ দশমিক ৪৯ বর্গকিলোমিটার। উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় দু’লাখ। উপজেলায় বার্ষিক মাছের চাহিদা প্রায় ৫ হাজার ৩০০ মেট্রিক। উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৬ হাজার ১০৭ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত প্রায় এক হাজার দুশ’ মেট্রিক টন। উপজেলায় কার্ডধারী মৎস্যজীবী রয়েছে ৯৮৩ জন এবং মৎস্য চাষি রয়েছে এক হাজার ১৭৮ জন। উপজেলায় মোট জলাশয়ের পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৯৯১ হেক্টর,মাছ বাজার ১৯টি ও মাছের আড়ত রয়েছে ২২টি। উপজেলায় কার্প জাতীয় পোনা মাছের কোনো সংকট নাই,তবে মাগুর,শিং,ট্যাংরা, কৈ ও পাবদা মাছের পোনার সংকট রয়েছে। মাছের ফিড কারখানা রয়েছে ৩টি। উপজেলায় নিবন্ধিত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি রয়েছে ৭টি।

অন্যদিকে পোনামাছ সরবরাহে রয়েছেন ৩০ জন্য পোণা ব্যবসায়ী। দেশি প্রজাতির মাছের পাশাপাশি রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, গ্রাসকার্প, তেলাপিয়া মাছচাষে বেশি লাভজনক হিসেবে এসকল মাছের চাষের পরিমাণও বেশি। প্রতিবছর মাছ চাষের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জানা গেছে, আগের দিনে প্রতি বিঘা পুকুরে ৫ মণ মাছ উৎপাদন হতো এখন সেখানে ১০ থেকে ১২ মণ মাছ উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলায় পুকুর-দীঘি মিলে জলাশয়ের মোট আয়োতন প্রায় এক হাজার ৯৯১ হেক্টর।বার্ষিক মাছের 

উৎপাদন ৬ হাজার ১০৭ মেট্রিক টন।

এছাড়াও শিব ও বারনই নদীর আয়তন প্রায় ১৫০ হেক্টর। এখানে মাছের উৎপাদন প্রায় ৩৫ মেট্রিক টন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেক প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মেট্রিক টন জীবন্ত ও মরা মাছ রাজধানীসহ দেশের অভ্যন্তরে রফতানি হয়ে থাকে। স্থানীয় মৎস্য চাষিদের মতে, এখানে রফতানিযোগ্য মাছ চাষের জন্য জরুরি মাছের খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (কারখানা)। রোগবালায় নির্ণয়সহ নিরাময় কেন্দ্র প্রয়োজন। মাছের খামারে বিদ্যুত সরবরাহ সহলভ্য হওয়া প্রয়োজন।

মাছ চাষিরা জানান, উন্নত প্রজাতির মাছচাষে অনেকটাই অন্তরায় হচ্ছে খাদ্যের দাম বেশি এবং রোগ প্রতিরোধমূলক আশানুরূপ ব্যবস্থা নেই বলে। স্থানীয়ভাবে মাছের তেমন কোনো খাদ্য উৎপাদন কারখানা না থাকার কারণে খাবারের আনা-নেয়ার ব্যয় খুব বেশি হয়। এজন্য লাভ কম হয়।এছাড়াও মাছের রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠা দরকার বলে তারা মনে করেন।

মৎস্যচাষি ফখরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় যে হারে পুকুরের সংখ্যা বাড়ছে, খাবারের দাম বাড়ছে, পুকুরের ইজারামূল্য বাড়ছে সে হারে মাছের দাম বাড়েনি। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগ-বালাইয়ের কারণে মাছ মরে যায়। সে অনুযায়ী মাছের দাম বাড়েনি ফলে পুকুরে মাছ চাষ করে আগের মতো লাভ নেই, তবুও লাভজনক পেশা এটি। স্থানীয়ভাবে মানসম্মত খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা স্থাপিত হলে মৎস্যচাষিরা উপকৃত হবে। মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে মাছ-উৎপাদন।

আদর্শ মৎস্যচাষি শাফিউল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে পুকুরের বাৎসরিক লিজমূল্য এবং মাছের খাদ্যের দাম বেড়েছে। এজন্য লাভের পরিমাণ কমে আসছে। তবুও মাছ চাষ একটি লাভজনক পেশা। বেকার মানুষদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আগামী দিনে আরো সুফল বয়ে আসুক এটায় প্রত্যাশা।

কেশরহাটের মাছের আড়তে মাছ কিনতে আসা মাছ ব্যবসায়ি নাজিম বলেন, আমি কেশরহাট হতে পাইকারি মাছ কিনে মচমইল বাজারে খুচরা বিক্রি করি। প্রতিদিন এভাবে মাছ কেনাবেচা করেই চলে আমার সংসার। কেশরহাট অনেক মাছ আমদানি হয় কিন্তু জায়গার খুব অভাব। জায়গা থাকলে এ অঞ্চল সর্ববৃহৎ মাছ বাজারে পরিণত হবে। 

তানোর,বাগমারা,মান্দা ও নিয়ামতপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কেশরহাটের মাছের আড়তে মাছ নিয়ে আশা হয়। কেশরহাট বাজারের আড়ত মালিক সুবারক আলী সুবহান জানান, কেশরহাট মাছ বাজার মোহনপুরের মধ্যে জমজমাট এবং জনপ্রিয় বাজার। মোহনপুর উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী, তানোর, বাগমারা, মান্দা, নিয়ামতপুর থেকে এখানে মাছ আসে।

তানোর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন জানান,তানোর উপজেলা বাণিজ্যিকভাবে মাছচাষের সম্ভাবনাময় একটি এলাকা। এখানে মাছচাষে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই। এখানে স্থানীয় চাহিদার বেশী মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে। 


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.