ফরিদপুরের সালথায় নিয়মবহির্ভূতভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী বলছেন, প্রভাবশালী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বালি কোনো শর্তাবলী না মেনেই ডিলার নিয়োগ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুর আড়াইটায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া বাজারের মেসার্স মোল্যা এন্ড ব্রাদার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আতিকুর রহমান মোল্যা (৬০)। নিয়মানুযায়ী এবং শর্ত পূরণ করে গত ৪ ফেব্রুয়ারিতে আবেদন করেন তিনি। এছাড়া একই বাজার এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে আবেদন করেন রিপন মাতুব্বর নামে অপর এক ব্যক্তি। গত ১৮ জুলাই রিপন মাতুব্বরকে চূড়ান্ত ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে আতিকুর রহমান মোল্যা জানান, রিপন মাতুব্বর ডিলার পাওয়ার জন্য ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে আবেদন করেন। যার কাগজপত্র না দেখে একটি মহলের মাধ্যমে তাকে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়।
এদিকে ডিলার নিয়োগের প্রজ্ঞাপণের শর্তাবলীতে উল্লেখ রয়েছে, ডিলার পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের ঘরের দৈর্ঘ্য ২১ ফুট, প্রস্থ ১২ ফুট, উচ্চতা ২৮ ফুট, চারপাশে দেয়াল, ভিটি পাকা ও ঘরটি দেড়তলা বিশিষ্ট হতে হবে। কিন্তু এসব শর্ত না মেনেই নিয়োগ দেয়া হয় বলে আতিকুর রহমান দাবি করেন। এ সময় তিনি প্রমাণস্বরূপ ঘরের ছবি ও ভিডিও দেখান। তিনি বলেন- রিপন অন্যের ঘর দেখিয়ে আবেদন করেন, সেই ঘরটির দৈর্ঘ্য ১২ ফুট ও প্রস্থ ৯ ফুট। যা প্রজ্ঞাপনের শর্তের সাথে সাংঘর্ষিক।
তবে জানতে চাইলে রিপন মাতুব্বর দাবি করেন, প্রজ্ঞাপনের শর্তানুযায়ী তাঁর ঘর রয়েছে। বর্তমানে ওই বাজারে তার ঘরটি দোতলার বলেও দাবি করেন।
এসব বিষয়ে পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়ে গত ২৭ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ৩ আগস্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে অভিযোগ দেন আতিকুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন- ইউএনও’র কাছে অভিযোগ দেয়ার প্রায় ১ মাস হয়ে গেলেও ঘরটি পরিদর্শন করেননি এবং কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালি বলেন- কারও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়নি। যারা আবেদন করেছিল যাচাই-বাছাই করেই লটারীর মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারপর একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আফজাল হোসেনকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দ্রুতই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে এবং প্রতিবেদনের আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।