× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বড়লেখায় শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

রেদওয়ান আহমদ, বড়লেখা (মৌলভীবাজার)

২১ আগস্ট ২০২৫, ১৪:২৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

* শিক্ষা কর্মকর্তা মামুনের খুঁটির জোর কোথায়?

* দুর্নীতিতে ভেঙে পড়েছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। একের পর এক অভিযোগ ও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরও তিনি বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন, যা জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে তার খুঁটির জোর আসলে কোথায়?

দুর্নীতি শুরু ২০১৯ সাল থেকে: ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল বড়লেখায় যোগদানের পর থেকেই আব্দুল্লাহ আল মামুন বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিজ মিঞা তার অনিয়মের বিষয়ে একাধিকবার সতর্ক করলেও মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে তাকে বদলির পাঁয়তারা শুরু করেন।

একপর্যায়ে মহদিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক (যিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক সাবেক সভাপতির ঘনিষ্ঠ ছিলেন) এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় মামুন তার প্রতিশোধস্বরূপ রফিজ মিঞাকে ‘শাস্তিপূর্ণ বদলি’ করাতে সক্ষম হন।

পুরাতন ভবন ও গাছ বিক্রিতে কোটি টাকার দুর্নীতি: বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পুরাতন ভবন এবং গাছ বিক্রি করেন মামুন। নিয়ম অনুযায়ী, এসব বিক্রির জন্য উপজেলা টেন্ডার কমিটির অনুমোদন এবং গণবিজ্ঞপ্তি প্রয়োজন, কিন্তু মামুন তা তোয়াক্কা না করে নিজেই সিলেট থেকে ভাঙারিদের এনে বিক্রি করেন।

তিনি স্থানীয় কিছু নেতাকে ম্যানেজ করতে ১-২টি বিদ্যালয়ের নামে ভাগ বসিয়ে তাদের চুপ করিয়ে রাখেন। এভাবে দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুজানগর বালিকা, সৎপুর বালক, ইটাউরী, ভট্টশী, কাঠালতলীসহ একাধিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ও গাছ বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন।

সরকারি বরাদ্দ লুটপাটের অভিযোগ:

২০২২-২৩ অর্থবছর: ১৩টি স্কুলের জন্য মাইনর মেরামতের ৩২ লাখ টাকার পুরোটাই লুট করেন।

০২৩-২৪ অর্থবছর: জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ৩৩টি বিদ্যালয়ের বরাদ্দ ৫০ লক্ষ টাকা থেকে শতকরা ৩০-৫০% হারে চাঁদা আদায় করেন।

বিতর্কিত বই বিক্রি ও অর্থ আত্মসাৎ : আওয়ামী লীগের বিতর্কিত বই ‘আহবান’, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ ‘২০০৯–২০২৩’ এবং ‘সকলের তরে সকলে আমরা শেখ হাসিনা’ নামক বইটি ২৪০০ টাকা মূল্যে ১৫১ জন প্রধান শিক্ষককে বিক্রি করেন। বই বিক্রি বাবদ প্রাপ্ত ৩,৬২৪০০ টাকা আত্মসাৎ করেন।

বই পরিবহন ও অন্যান্য দুর্নীতি: ২০২৪ সালে সরকারি বই পরিবহনের লক্ষাধিক টাকা তিনি প্রধান শিক্ষকদের ব্যাংক একাউন্টে না দিয়ে নিজে উত্তোলন করেন।এছাড়াও স্লিপ, মেরামত, পরীক্ষা খাতসহ যাবতীয় বিল পাস করতে ২০-৫০% ঘুষ নিতেন। শিক্ষক বদলি, বিদেশ গমন, হজ্ব, মেডিকেল ছুটি-সবক্ষেত্রে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বিভাগীয় অনুমতি ছাড়া ২০-২৫ জন শিক্ষক বিদেশে থাকলেও ব্যবস্থা না নিয়ে মাসোহারা নিতেন।প্রতি বছর কেজি স্কুলগুলো থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করতেন।পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বানিজ্যেও জড়িত ছিলেন।

নারী শিক্ষকদের যৌন হয়রানির অভিযোগ: একটি দৈনিক পত্রিকায় ১৭ জুন ২০২৩ সালে “ফ্লেক্সিলোড-ইন্টারনেটের এমবি ও নেন শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন” শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এছাড়াও নারী শিক্ষকদের যৌন হয়রানির অভিযোগও উঠে আসে, যা নিয়ে স্থানীয়ভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও কর্তৃপক্ষ আজও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বড়লেখার শিক্ষা অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলা এ ধরণের দুর্নীতি, অনিয়ম এবং ক্ষমতার অপব্যবহার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পুরো উপজেলার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর চরম মূল্য দিতে বাধ্য হবে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.