পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পরও চট্টগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামেনি। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন আওয়ামী লীগপন্থী প্রভাবশালী নেতা ও উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এরাদুল হক ভুট্টু। তার নেতৃত্বে নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য, তদবির ব্যবসা ও জাল দলিলপত্র তৈরির অভিযোগ রয়েছে।
আত্মগোপনে থেকেও প্রভাব
৫ আগস্টের পর থেকে ভুট্টু আত্মগোপনে গেলেও তার চাকরি, পদবি ও বেতন-ভাতা বহাল রয়েছে। অভিযোগ আছে, দীর্ঘ অনুপস্থিতির পরও তাকে পুরস্কৃত করার মতোভাবে আধুনগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বদলি দেওয়া হয়। তার নির্দেশেই জেলা রেজিস্ট্রার থেকে শুরু করে সাব-রেজিস্ট্রার পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সহযোগীদের নিয়ন্ত্রণ
ভুট্টুর অনুপস্থিতিতেও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা কার্যত পুরো চট্টগ্রামের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক স্বৈরশাসক হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়ার ঘনিষ্ঠ মো: হোসাইন ওরফে ‘ব্যান্ডিজ হোসাইন’, জামাল উদ্দিন, প্রশান্ত কুমার সরকার, আফতাব উদ্দিন চৌধুরী, সদর অফিসের নকলনবিশ দিদার, কামরুল ইসলাম ও গিয়াস উদ্দিন। বদলি বাণিজ্য ও ফি আদায়ে অনিয়মের মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
কোটি টাকার সম্পদ
অভিযোগ রয়েছে, ব্যান্ডিজ হোসেন সম্প্রতি কয়েক কোটি টাকার ফ্ল্যাটসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অপরদিকে কামরুল ইসলাম অবৈধভাবে ফি কালেকশনের মাধ্যমে অল্প সময়েই অঢেল সম্পদ অর্জন করেছেন।
দলিল লিখক-উকিলদের দাবি
চট্টগ্রাম সদরসহ অন্যান্য সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লিখক, নকলনবিশ ও উকিলরা অভিযোগ করেন, ভুট্টু সিন্ডিকেটের কারণে অফিসের শান্তি-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। দুর্নীতি, বদলি বাণিজ্য ও জাল দলিলপত্রের মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
তাদের দাবি, অফিসের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ভুট্টু সিন্ডিকেটকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরি।