মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে ৫০ শয্যা হাসপাতালটি জনবল সংকট, চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহারে অদক্ষতা এবং অব্যবস্থাপনায় উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের সরকারি হাসপাতালটি সমস্যায় জর্জরিত। হাসপাতালের ১৩৬ টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৮৬ জন।
বিশেষ করে জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন, গাইনী, সার্জারি, এনেসথেসিয়া), মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র স্টাফ নার্স, টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিস্ট সহ অন্যান্য পদে রয়েছে বিপুল শূন্যতা। এছাড়া কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, ইসিজি মেশিন এবং ডিজিটাল আল্ট্রাসনোগ্রফী মেশিন সরবরাহ করা হলে ও এসব মেশিন সরবরাহ করার পরও কোন টেকনিশিয়গ্রাফার) পদে লোক না থাকায় মেশিনগুলোর সুবিধা রোগীদের দিতে পারছে না।
তবে কনসাটেন্ট খাদিজা রহমান শিল্পী (গাইনী) কমলগঞ্জ থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করলেও প্রেষণে ঢাকা শহীদ সোহরাওয়াদ মেডিকেল কলেজে কর্মরত রয়েছে। এদিকে মেডিকেল অফিসার পদে শূন্য রয়েছে ২টি, জুনিয়র কনসানটেন্ট (মেডিসিন) ১টি পদে শূন্য রয়েছে, সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে শূন্য রয়েছে ৫টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এসআই) পদে শূন্য রয়েছে ১টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফী) পদে শূন্য রয়েছে ১টি, কার্ডিওগ্রাফার পদে শূন্য রয়েছে ১টি, ওয়ার্ড বয় পদে শূন্য রয়েছে ১টি এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ১টি পদ শূন্য রয়েছে।
এছাড়া কোটি টাকা ব্যয় করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৩ সালে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, ২০১৪ সালে ডিজিটাল আল্ট্রাসনোগ্রাফী মেশিন এবং ২০২০ সালে ইসিজি মেশিন সরবরাহ করা হয়। ৪টি মেশিন সরবরাহ করার পরও কোন টেকনিশিয়ান (সনোলিস্ট/রেডিওগ্রাফার) পদে লোক না থাকায় কোটি টাকার মেশিনগুলোর সুবিধা রোগীদের দিতে পারছে না।
এতে করে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগীরা এসব যন্ত্রের সুবিধা না পেয়ে বাহিরে ব্যয়বহুল খরচে পরীক্ষা নিরিক্ষা করাতে হচ্ছে।
আরো জানা যায়, হাসপাতালে দুইটি এ্যাম্বুলেন্স এর মধ্যে ড্রাইভার সংকটের কারণে ১টি এ্যাম্বুলেন্স সচল আছে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী শিরিন আক্তার, ফয়সল মিয়া, লুতফা বেগম, আহমদ আলী, জয়নাল মিয়া বলেন, হাসপাতালে আসলে ডাক্তার কম থাকায় চিকিৎসা নিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
পরীক্ষা-নিরিক্ষার প্রয়োজন হলে হাসপাতালে করানো সম্ভব হয়না, বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারী সেন্টারে করাতে হচ্ছে। ঔষুধ থাকে না নিয়মীত। বাহির থেকে কিনে খেতে হয়। ডায়বেটিকস এর ঔষুধ ৪ মাস থাকলে ৮ মাস থাকে না। আমরা গরীব মানুষ কিভাবে এসব ঔষুধ কিনে খাব, না মরে এমনিতেই আমরা বেচে আছি। এছাড়া হাসপাতালটির রোগী থাকার ওয়ার্ডগুলোর বেডকাবার,বালিস নোংরা আবর্জনা সহ বাথরুম সমূহ নিয়মিত পরিস্কার করা হয়না ও পেছনের অংশে ময়লা আর্বজনার স্তুপ জমে থাকায় নোংরা পরিবেশ বিরাজ করছে।
ফলে সারাক্ষণ মশামাছির উপদ্রব লেগেই আছে। তাছাড়া ভর্তি রোগীদের জন্য বরাদ্ধ কৃত খাবারের মান ও নিন্ম মানের। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভর্তি থাকা রোগীরা একদিকে যেমন মানসম্মত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে বাড়তি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একজন ডাক্তার বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে রোগীদেরকে সেবা দিচ্ছি। পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় অতিরিক্ত সময়েও ডিউটি করতে হয়।
মৌলভীবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মামুনুর রহমান জানান ডাক্তার নার্সসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকেটের সমস্যা পুরো সিলেট বিভাগেই। বিষয়টি আমার জানা আছে। এ বিষয়ে একাধিকবার, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। শূন্য পদের চাহিদা জমা দেয়া হয়েছে, আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh