১২ বছর ধরে শিকলবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিলো আপন ভাই-বোন৷ দরিদ্র পিতার পক্ষে ছিলোনা চিকিৎসা করানোর মতো অবস্থা। মানসিক ভারসাম্যহীন ভাই বোনকে নিয়ে পরিবার ছিলো বিপাকে৷ এমনি দূর্বিষহ অবস্থায় নিদারুন কষ্টে নিরুপায় দিন কাটছিলো তাদের৷
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের গণেরগাঁও গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর ফজলু মিয়ার সন্তান আছমা খাতুনন (২৮) ও জাহাঙ্গীর (২৫)।
সোমবার (২৫ আগষ্ট) দুপুরে স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে তাদের শিকল খুলে এম্বুল্যান্সে তুলে দেন। এছাড়াও সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে তাদের হাতে নগদ আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দরিদ্র দিনমজুর পিতা ফজলু মিয়ার চার মেয়ে ও এক ছেলে। এর মধ্যে দুজন মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনবেলা খাবার যোগাড় করতে হিমসিম অবস্থা এর মধ্যে তাদের নিয়ে বাড়তি চিন্তার শেষ ছিলোনা তাদের। ছেড়ে দিলেই অসংলগ্ন নানান ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার চেষ্টা করতো দুজন৷ ফলে নিরুপায় হয়ে শিকলবন্দী করে আটকিয়ে রাখা হতো তাদের৷ প্রশাসনের এই সহায়তায় তাদের চিন্তা কিছুটা হলেও কমেছে বলে জানায়৷ প্রশাসনের এমন আন্তরিকতায় গ্রামবাসীও সন্তুষ্ট৷
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী মাসুম পাঠান বলেন, আমি ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করি৷ ওনিও শুনে দ্রুত তাদের বাড়িতে এসে দেখে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার আশ্বাস দেন এবং পরে তাকে সহায়তা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে৷
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনা জানার পর সাথে সাথে গিয়ে তাদের মানবিক বিপর্যয় দেখে তাৎক্ষণিক সহায়তার চিন্তা করি৷ ঢাকায় মানসিক ইন্সটিটিউটে ভর্তির ব্যাবস্থা করেছি৷ নগদ আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েছি। সরকার ও প্রশাসন জনগণের জন্য সবসময়ই আন্তরিক।
এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) লাবনী আক্তার তারানা ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন।