ডিজিটাল অর্থনীতির রূপরেখা প্রণয়নে একই মঞ্চে ফিনটেক, নেটওয়ার্ক, ব্যাংক ও নীতিনির্ধারকরা মাস্টারকার্ড ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস (আইসিএমএবি) যৌথভাবে আজ ঢাকার প্যান প্যাসিফিক হোটেলে আয়োজন করে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ সামিট ২০২৫’। ‘দ্য ইন্টারসেকশন অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই সম্মেলনে ব্যাংক ও ফিনটেক খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও নীতিনির্ধারকেরা একত্রিত হয়ে ক্যাশলেস অর্থনীতির সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেন। সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক-এর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
উদ্বোধনী আলোচনায় ছিল ‘ক্যাশলেস অর্থনীতি গঠনে ফিনটেকের ভূমিকা’, এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম. মাসরুর রিয়াজ। এ প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মো. শারাফাত উল্লাহ খান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, বিকাশ লিমিটেডের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহমেদ, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের পরিচালক জাকিয়া সুলতানা এবং সেবা প্ল্যাটফর্ম এর প্রতিষ্ঠাতা ও গ্রুপ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদনান ইমতিয়াজ হালিম। তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, সহযোগিতা বৃদ্ধি ও একটি নিরবচ্ছিন্ন ক্যাশলেস ইকোসিস্টেম গড়ার ক্ষেত্রে ফিনটেকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।
সামিটের শেষ পর্বে সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ‘রেগুলেটরি রিফর্মস ও পলিসি রোডম্যাপ ফর অ্যা ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন—ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, সচিব, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, মো. আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ, সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ড. মো. হাবিবুর রহমান, ডেপুটি-গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক, মাসরুর আরেফিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (এমডি ও সিইও), দ্য সিটি ব্যাংক পিএলসি; চেয়ারম্যান, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি), অনিতা গাজী রহমান, প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং পার্টনার, দ্য লিগ্যাল সার্কেল। আলোচনায় বক্তারা বলেন, উদ্ভাবন ও ভোক্তা সুরক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে অগ্রগতিমূলক সংস্কার, রেগুলেটরি স্যান্ডবক্স এবং সহায়ক কর কাঠামো অপরিহার্য। এসব উদ্যোগ বাংলাদেশের ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করবে এবং দেশকে ক্যাশলেস উদ্ভাবনে আঞ্চলিক নেতৃত্বের জায়গায় নিয়ে যাবে।
*আইসিএমএবি’র প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এফসিএমএ* বলেন, “বাংলাদেশ এখন আর্থিক রূপান্তরের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ক্যাশলেস অর্থনীতির পথে যাত্রা আর ভবিষ্যতের লক্ষ্য নয়, বরং তা বর্তমানের জরুরি বাস্তবতা। এই সামিটে নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে বাস্তবায়নকারী অংশীদার—সবাইকে একই মঞ্চে এনেছে, যা একটি কার্যকর রূপরেখা নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি।”
*মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল* বলেন, “আইসিএমএবি’র সঙ্গে যৌথভাবে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ সামিট ২০২৫’ আয়োজন করতে পেরে মাস্টারকার্ড গর্বিত। একটি ক্যাশলেস সোসাইটি উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করে, দক্ষতা বৃদ্ধি করে ও সমাজের সব স্তরে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে। আজকের সংলাপগুলো বাংলাদেশের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভবিষ্যতমুখী অর্থনীতি গড়ে তোলার দিকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ।”