ছবি: সংগৃহীত
বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম গ্যালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের যথুরাম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবনের ইট খুলে নতুন বৌদ্ধবিহার নির্মাণে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন বৌদ্ধবিহার নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে নতুন ইট আনার পরিবর্তে ঠিকাদার বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনের ইট খুলে কাজে লাগাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের বেশিরভাগ অংশ ভেঙে নেওয়া হয়েছে। দেয়ালের ইটগুলো খুলে এনে বৌদ্ধবিহার নির্মাণস্থলে স্তূপ আকারে রাখা হয়েছে। অনেক ইট ভাঙা অবস্থায় কংক্রিট তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়েছে।
বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ উ: পাইন্দিত থেরো (ভান্তে) অভিযোগ করে বলেন, “আমি নিজে চোখে দেখেছি—স্কুলের পুরনো ইট ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ মাত্র তিন মাসের মধ্যে ঢালাই ছাদ ফুঁটে পানি পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক তিনি জানান, ‘ঠিকাদার নতুন কোনো ইট আনেননি। প্রথমে নদীর বালু ব্যবহার করলেও আপত্তি উঠলে পরে বান্দরবান থেকে বালু আনা হয়। কিন্তু ইট সবই স্কুলের পুরনো ভবন থেকে নেওয়া হয়েছে।’
ঠিকাদার কামাল পাশা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি নতুন ইট ব্যবহার করেছি। পুরনো ইটের বিষয়ে অভিযোগটি সত্য নয় বলে জানান”
যথুরাম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফোসিং নু মার্মা জানান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নির্দেশে ভবনের ইট নেওয়া হলেও উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে তা বন্ধ করা হয় তবে এর বিষয় লিখিত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ নাকচ করেছেন গ্যালেঙ্গ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেনরত ম্রো।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রুমা উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মহসিন চৌধুরী বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি কাজ বন্ধ করে দিই এবং নতুন ইট ব্যবহারের নির্দেশ দিই। পরে শুনেছি নৌকাযোগে নতুন ইট আনা হয়েছে। তবে স্কুল ভাঙার অনুমতি শিক্ষা বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত নয়।’
তিনি আরও জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে খাগড়াছড়ির এক ঠিকাদারকে কাজটি দেওয়া হয়। প্রকল্প অনুযায়ী এটি দোতলা হবে যেখানে নিচতলা পাকা ও উপরতলা টিনসেট।
উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত জানান, “অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আমার দপ্তরের তত্ত্বাবধানে কংক্রিট পরীক্ষা করা হয়েছে।”
বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, “সরকারি ভবন ভাঙার জন্য নীতিমালা রয়েছে। অনুমতি ছাড়া ভাঙা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যথুরাম পাড়া বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অনুমোদনের কাগজ নেই। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh