ছবি: সংবাদ সারাবেলা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, আপনাদের প্রত্যেককে সচেতন থাকতে হবে। বিগতদিনে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপনারা যেভাবে জনগণকে একসাথে ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন, সেই কাজটি এখনো শেষ হয়ে যায়নি। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখার কাজটি আমাদেরকে অব্যাহত রাখতে হবে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনে সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মির্জা ফয়সল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৫১ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন পয়গাম আলী।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের ওপর এই দায়িত্ব যে- গণতন্ত্রের প্রতি যেকোনো হুমকিকে আমরা অবশ্যই মোকাবেলা করবো। তবে সেই পদ্ধতি যে পদ্ধতি জনগণ সমর্থন করে। অবশ্যই আমরা এমন কোন পরিস্থিতিতে এমন কোন সিদ্ধান্ত বা পদ্ধতি আমরা গ্রহণ করবো না যেটাতে জনগণের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হয়।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব গণতন্ত্রকে কোনভাবে কেউ যে বিঘ্নিত করতে না পারে। ১৯৭১ সালে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে আরও হাজারো মানুষের আত্মদানের বিনিময়ে, লক্ষ লক্ষ মানুষ অত্যাচারিত নির্যাতিত হয়েছে তারপরও তারপরও থেমে থাকেনি গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলন। সেই গণতন্ত্রের ফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারি আমরা তারজন্য আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, আজ আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে - জাতীয় নির্বাচন আমরা যত সহজ ভাবছি তত সহজ নয়। যেভাবে বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে গণতন্ত্রের আন্দোলন জোরদার করে তুলেছিল এবং সফল করেছিল। আজকে এই কাউন্সিল অধিবেশনে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক- যতক্ষণ পর্যন্ত এই দেশে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃ প্রতিষ্ঠা না হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ গণতন্ত্রের লাইনে উঠে না আশে মানে গণতন্ত্রের রেললাইনে না উঠে আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন থেমে থাকবে না। আজকের এই অধিবেশনে এটিই হোক আমাদের প্রথম প্রতিজ্ঞা।
আমাদের দ্বিতীয় আরেকটি শপথ গ্রহণ করতে হবে-বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে এই বাংলাদেশকে আবারও পুর্ণগঠন করা। বাংলাদেশকে আবার ধীরে ধীরে গড়ে তোলা মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী।
তাই আসুন আমরা এই কাউন্সিল থেকে দু’টি শপথ গ্রহণ করি-আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ যতক্ষণ না পর্যন্ত গণতন্ত্রের যাত্রায় ফিরে না আসবে, গণতন্ত্রের রেললাইনে চলাচল শুরু করতে না পারে ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপির সকল নেতাকর্মী অতন্দ্র প্রহরীর মত জেগে থাকবে এবং গণতন্ত্র উদ্ধারে কাজ করবে।
দ্বিতীয় হচ্ছে-জনগণের প্রত্যাশা যে নির্বাচন আগামী দিনের, সেই প্রত্যাশিত নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি জনগণের রায়ে সরকার গঠনে সক্ষম হলে ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদের সেই ৩১ দফার আলোকে এবং জনগণের প্রত্যাশিত যে বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের জীবন বাজি রেখে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ। এই দুটি হোক আমাদের এই কাউন্সিলের শপথ।
এদিকে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে। আজকে যখন সমগ্র জাতি উন্মুখ হয়ে আছে একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমাদের সরকার গঠন করবো, গণতন্ত্রে ফিরে যাবে। ঠিক তখনি এই ষড়যন্ত্রগুলো শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই ড. ইউনূসকে। তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করছেন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তিনি বলেছেন-একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ তাকে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সড়ায়। সেইজন্য আমি তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই সে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে যারা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র উত্তোরনের পথকে বেছে নিতে চেয়েছেন। আর আহবান জানাতে চাই সে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে-যারা আজকে ভুল করছেন এই চিন্তা করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করলে, বাধাগ্রস্ত করলে তারা উপকৃত হবেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হবে না।
সেজন্য আমি আবারও বলছি- আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি। আপনারা সবসময় সজাগ ও সচেতন থাকবেন। প্রতি মুহুর্তে আমাদেরকে সর্তক থেকে জনগণের সে আশা প্রত্যাশা অর্থাৎ একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার, সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, গালে গলায় গামছা দিয়ে নিয়ে আসবো, ভারতে গিয়ে রক্ষা পাবা। তুমি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছো, সেই টাকাগুলো ফেরত দিতে হবে। এখন আবার শুনছি নির্বাচন করবে, এগুলো চিন্তা বাদ দেন।
তিনি বলেন, গণহত্যা করেছেন, টাকা চুরি করেছেন এখনো ক্ষমা চান নাই। যদি গণপিটুনি একবার শুরু হয়, তাহলে ঘরে থেকে বের করে এনে জনতার আদালতে বিচার হবে। এ সরকার বিচার শুধু করেছে আমরা সমর্থন করেছি। কিন্তু বিচার হবে নতুন সরকার এলে।
বিএনপি গণমানুষের দল, বিএনপি কৃষক শ্রমিক সাধারণ মানুষের দল। এজন্য সবসময় মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়েছে। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, জেলা বিএনপি, উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh