মৌলভীবাজার শহরে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক সহ অসংখ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান আর নজরদারি না থাকায় সেবাপ্রার্থী ভুক্তভোগীরা চরম হতাশ। তারা চান প্রতিকার আর সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিয়মতি তদারকি। যেন সাধারণ মানুষ তাদের প্রাপ্য সম্মান আর সুচিকিৎসাটুকু পান।
গত ৬ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভুক্তভোগীর অভিযোগে সময়মতো চিকিৎসক না পাওয়া, অপ্রয়োজনীয় টেষ্ট, ঔষধ না পাওয়া, অতিরিক্ত বিলের বোঝা সহ চরম অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠে শহরের নামি-দামি এক হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ওই পোস্টটি ভাইরাল হলে রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর পর টনক নড়ে প্রশাসনের।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মৌলভীবাজার শহরের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে শুরু হয় সেনা বাহিনীর সহযোগিতায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান। অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষধ, হাসপাতালে ওয়েটিং রুম না থাকা ও লাইসেন্স না থাকা, নোংরা পরিবেশ সহ নানা অনিয়মের অপরাধে ৫ টি ক্লিনিক ও ফার্মেসীকে মোট ৮৩ হাজার টাকা জরিমান করেন ভ্রাম্যমান আদালত।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা এর নেতৃত্বে চলা অভিযানে শহরের শাহজালাল প্রাইভেট হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক এন্ড কন্সাল্টেশন সেন্টারে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়ায় ১৫ হাজার টাকা, গ্রীন লাইফ হাসপাতালের লাইসেন্স ও ওয়েটিং রুম না থাকায় ২০ হাজার টাকা, সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিবেশ নোংরা থাকায় ৩০ হাজার টাকা, হেলথ এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়ন্ত্রণাধীন জেরিন ড্রাগ হাউজে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়ায় ৮ হাজার টাকা ও লাইফ লাইন হাসপাতালের ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ I ওষধ পাওয়ায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা রোধে নিয়মতি তদারকি করার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে জেলা টাস্কফোর্সের সদস্য সৈয়দ তোফাজ্জল হোসেন।
তিনি বলেন, ডাক্তারের চেম্বারে রোগীকে এডভান্স ফি জমা, প্যথলজিতে দক্ষ টেকনিশিয়ান , আইসিইউতে দক্ষ চিকিৎসক, জনবল দেয়ার বিষয়ে আমরা সুপারিশ করেছি। তিনি আরও বলেন, সব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকে একই নিয়মের আওতায় নিয়ে আসতেও সুপারিশ করেছি এবং নিয়মিত অভিযানের বিষয়েও সুপারিশ করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা জানান, জরিমানা ছাড়াও যে ধরণের অনিয়ম পেয়েছি তাতে আমরা তাদের সাবধান করেছি। তিনি বলেন এ ধরনের অভিযান আগামীতে অব্যাহত থাকবে।