কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার নানশ্রী গ্রামে ফসলি জমি দখল, দলিল জালিয়াতি ও পুকুর খননকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসব অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন নিকলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বর্তমান আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হাসান খান মনির। স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি শুধু গ্রামবাসী নয়, নিজ পরিবারের লোকজনকেও হয়রানি করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার নানশ্রী গ্রামে হাজী মো. ফরিদ উদ্দিন আহমাদ এর সত্ত্ব দখলীয় নানশ্রী মৌজায় এসএ ৩৮০ নং খতিয়ানের আরএস ১৯৭২ ও ১৯৭৪ দাগের ৪৪ শতাংশ জায়গা ও আরএস ৪১১ নং খতিয়ানের ১৯৮৬ দাগের ৫০ শতাংশের খাত ২১ শতাংশ ফসলিসহ মোট ৬৫ শতাংশ ভূমিতে জোরপূর্বক পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে।
এ ব্যাপারে ফরিদ উদ্দিনসহ এলাকাবাসী বাঁধা দিলে ফরিদ উদ্দিনের ৬৫ শতাংশ জমির পরিবর্তে অন্যত্র ৭০ শতাংশ জমি ৫ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে নিকলী সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এয়াজবদল দলিল সম্পাদন করে ফরিদ উদ্দিনকে বুঝিয়ে দেন। পরে এওয়াজবদল দলিল জালিয়াতি করে বিভিন্ন বানোয়াট শর্ত যোগ করে এড্যাডভোকেট মনির তার সহোদর ছোট ভাই জিয়াউল কবির খাঁনকে বাদি করে কিশোরগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মো. ফরিদ উদ্দিন তার স্ত্রী আয়শাসহ ১১জনকে বিবাদী করে মোকাদ্দমা দায়ের করে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আ. সাত্তার বলেন, মনির উদ্দিন আ.লীগের নেতার প্রভাব খাটিয়ে ফরিদ উদ্দিনের ফসলি জমিতে এক্সাভেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে ২২ শতাংশ জমিসহ মোট ৪৪ শতাংশ জমিতে পুকুর খনন করে। পরে গ্রাম্য শালিসে ফরিদ উদ্দিনকে ৭০ শতাংশ জমি অন্যত্র এওয়াজবদল করে বুঝিয়ে দেন মনির। কথা ছিল সাফ-কবলা রেজিস্ট্রি করে দিবে কিন্তু সে রেজিষ্ট্রি না করে ফরিদ উদ্দিনকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
মনিরের মামলায় সাক্ষী বানানো কুতুব উদ্দিন ও রুবেল মিয়া বলেন, ‘আমাদের নাম পরামর্শ ছাড়াই মামলার এজহারে লেখা হয়েছে। আমরা কোনোভাবেই ফরিদ উদ্দিন পরিবারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেব না।’ গ্রামের একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টে উকিলের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না। সে সবাইকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আমরা বহু বছর ধরে তার অত্যাচার সহ্য করছি।’
অ্যাডভোকেট জিয়াউল হাসান খান মনির বলেন, তার ফিশারিতে সরকারি বা অন্য কারও ব্যক্তিগত জমি নেই। তবে দলিল জালিয়াতি ও স্বাক্ষর নকলের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। কিন্তু স্ট্যাম্পে নকল স্বাক্ষর ও শর্ত যোগ করার বিষয়টি দেখানো হলে তিনি কোনো জবাব দিতে পারেননি।