সরকারি কর্মকর্তার প্রভাব খাটানোর অভিযোগ
চট্টগ্রাম হাটহাজারীর পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড পূর্ব আলমপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তার আপন ভাই ও ভাবির সঙ্গে যোগসাজশে এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে তাকে পৈত্রিক সম্পত্তিতে ঘর নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন। পারিবারিক বণ্টননামায় তিন ভাই তার পক্ষে থাকলেও সরকারি কর্মকর্তার প্রভাবে তিনি নিজের পৈত্রিক ভিটায় ঘর নির্মাণ করতে পারছেন না।
গত শনিবার চট্টগ্রাম একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, চাকরি জীবন শেষ করে অবসরকালীন প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে নিজের অংশে একটি ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এ জন্য পুরাতন ঘর ভেঙে পরিবারসহ ভাড়া বাসায় উঠে আসেন। কিন্তু নির্মাণ কাজ শুরু করার পরই তার ভাই মোহাম্মদ ইলিয়াস, যিনি এবি ব্যাংক হাটহাজারী শাখার ম্যানেজার, চুক্তি ভঙ্গ করে ঘর নির্মাণ বন্ধ করে দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ইলিয়াসের স্ত্রী শাহীনা মমতাজ বেগম (প্রভাষক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, হাটহাজারী সরকারি কলেজ) ও তার বোন নুসরাত সুলতানা মুন্নি (বর্তমানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক) প্রভাব খাটিয়ে তাকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। শামসুল ইসলামের দাবি, সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ওই কর্মকর্তা একাধিকবার তার বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেন, থানা পুলিশ দিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন এবং এমনকি জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার নির্মাণসামগ্রী রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাসায় থাকার কারণে তিনি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এ ঘটনায় তিনি চট্টগ্রামের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করে। মামলার পর আদালত নুসরাত সুলতানা মুন্নিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তবে এখনও তাদের গ্রেফতার করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুল ইসলাম বলেন, “রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে আমাকে পৈত্রিক ভিটায় ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছে না। আমি অসহায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। এখন আপনাদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, আমাকে যেন আমার পৈত্রিক ভিটায় স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে দেয়া হয়।”
তিনি অবিলম্বে ন্যায়বিচার নিশ্চিত ও নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শামসুল ইসলামের ছেলে মো. ওমর গণি এবং মো. মুছার ছেলে মো. সাকিব।